জেলা তৃণমূলের বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
পদপ্রাপ্তির পর প্রথম দলীয় কর্মসূচি। শাসক দল সূত্রের খবর, জেলা কমিটির সভায় যোগ দিয়ে তৃণমূল নেতা ছত্রধর মাহাতো জানিয়েছেন, জনগণ থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ যাওয়ায় লোকসভা ভোটে জেলায় খারাপ ফল হয়েছে।
জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন নেতা ছত্রধর এখন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। তাঁর মুখে জন-বিচ্ছিন্নের আত্মসমালোচনা শুনে জল্পনা শুরু হয়েছে শাসক দলের অন্দরে। তবে কি পদপ্রাপ্তির পর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন ছত্রধর। মঙ্গলবার জেলা কমিটির বৈঠকের পর তিনি বলেন, ‘‘সংগঠনের স্বার্থে জঙ্গলমহলের সব জেলাতেই সময় দেব। ঝাড়গ্রামেও যাতায়াত বাড়াব।’’ সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রাম শহরে থাকার জন্য ভাড়ার ঘরও খুঁজছেন ছত্রধর। জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু বলছেন, ‘‘রাজ্য সম্পাদক ছত্রধরবাবুর সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে। তাঁর পরামর্শ দলকে সমৃদ্ধ করবে।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি হওয়ার পর দুলাল এ দিনই প্রথম জেলা কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন। ঝাড়গ্রামের বনাঞ্চল সভাঘরে আয়োজিত ওই সভায় দুলাল জানিয়ে দেন, সংগঠনকে পোক্ত করতে বুথস্তর থেকে দলীয় সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। তবে পুরনোদের বাদ দিয়ে নয়। বরং পুরনোদের সঙ্গে নতুনদের নিয়ে বুথস্তর থেকে কমিটি হবে। তার পরে হবে অঞ্চল ও ব্লক স্তরের সম্মেলন। সর্বোপরি জেলা সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নয়া জেলা কমিটি গড়ার পক্ষপাতী তৃণমূলের জেলা সভাপতি। সূত্রের খবর, সভায় ফের একবার ছত্রধর দাবি করেন, তিনি আগে তৃণমূলেই ছিলেন। লোকসভায় তৃণমূলের তুলনায় খারাপ ফলের পর্যালোচনায় জন-বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা বলে তার উপায়ও বাতলে দেন ছত্রধর। তাঁর পরামর্শ, জেলা থেকে প্রতিটি ব্লক ও অঞ্চল স্তরের নেতৃত্বদের সুনির্দিষ্ট দলীয় কর্মসূচি দিতে হবে। সেই কর্মসূচি কীভাবে রূপায়িত হচ্ছে, সে ব্যাপারে প্রতি মাসে অঞ্চল ও ব্লক নেতৃত্ব জেলাকে জবাবদিহি করবেন। শাসক দলের একাংশের বক্তব্য, ছত্রধর বোঝাতে চেয়েছেন, পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি সাহায্যে প্রস্তুত। ই সভায় জেলা পরিষদ ও জেলা আইটি সেলের তরফে ছত্রধর-সহ দলের নতুন পদাধিকারী হিসেবে জেলা সভাপতি দুলাল, জেলা চেয়ারম্যান বিরবাহা সরেন, জেলা কো-অর্ডিনেটর উজ্জ্বল দত্ত ও অজিত মাহাতো, দুই রাজ্য সহ-সভাপতি সুকুমার হাঁসদা ও চূড়ামণি মাহাতো, যুব তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা ও যুব সভাপতি শান্তনু ঘোষকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
দুলাল জানান, চাষের মরসুম শেষ হলে বুথস্তরের ঘোষিত কর্মসূচি শুরু হবে। তবে ছত্রধরের পদপ্রাপ্তির পরে যে সমালোচনা শুরু হয়েছে তাতে জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন নেতাকে কতটা সক্রিয় করা হয় সেদিকে নজর আছে রাজনৈতিক মহলের।