কোলাঘাটেও সমবায় ভোটে তৃণমূলের বড় জয়। উল্লাসে মাতলেন কর্মী এবং সমর্থকেরা। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সমবায় নির্বাচনকে পাখির চোখ করছে ডান, বাম, গেরুয়া শিবির। সেই অ্যাসিড টেস্টে শুভেন্দু অধিকারীর জেলার কোলাঘাটে ডাহা ফেল করল গেরুয়া শিবির। দেউলিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে ১২টি আসনের সব ক’টিতেই হারের মুখ দেখল তারা। যদিও বিজেপির দাবি, বামেদের পেছনে ফেলে তারা এই সমবায় ভোটে যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে, তা-ই তাদের ‘নৈতিক জয়’।
দেউলিয়া সমবায়ে মোট ১২টি আসনের মধ্যে ২টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। বাকি ১০টি আসনে ভোট হয় শুক্রবার। ফল প্রকাশের পর দেখা গেল, সব ক’টিতেই বিজেপিকে ধরাশায়ী করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে জয়ী তৃণমূল। শাসক শিবিরের দাবি, এখানে সিপিএম ৭টি আসনে ও বিজেপি ৮টি আসনে লড়াই করেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত দুই দলই দুরমুশ হয়েছে তাদের কাছে। কোলাঘাট ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অসীমকুমার মাইতির মন্তব্য, ‘‘স্থানীয় পঞ্চায়েতের উন্নয়নের কাজই এই নির্বাচনে জয়ের মূল হাতিয়ার।”
এই হারের পর বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি শেখ সাদ্দাম হোসেনের দাবি, “এই নির্বাচনে নৈতিক জয় হয়েছে বিজেপির। কারণ, সামান্য সমবায় নির্বাচনের জন্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীকেও মাঠে নামতে হয়েছে। ভয় দেখিয়ে আমাদের ২টি আসনে প্রার্থী তুলে নিতে বাধ্য করেছে ওরা। তার পরেও বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘নির্বাচনের সময় চাপা সন্ত্রাস আর ভোট কিনতে ব্যাপক টাকার খেলা হয়েছে।” এই সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। তৃণমূল নেতৃত্বের মন্তব্য, “হারের পর সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে গা বাঁচাতে চাইছে বিরোধীরা। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বিজেপি এভাবে ধরাশায়ী হবে। শুধু কোলাঘাট নয়, তৃণমূল রাজ্য জুড়ে বড় জয় পাবে।’’
বিগত কয়েক মাস ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে একের পর এক সমবায়ে নির্বাচন চলছে। সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাচ্ছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে নন্দকুমারে সমবায় নির্বাচনে রাম-বাম জোট গড়ে তৃণমূলকে ধরাশায়ী করার পর সর্বত্র নন্দকুমার মডেল নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। তবে পরবর্তী কালে সিপিএমের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিজেপির সঙ্গে তাদের জোট গড়ার কোনও প্রশ্নই নেই। অন্য দিকে, জেলার অধিকাংশ সমবায়ে জয় পেয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল শিবির।