সভায় শত্রুঘ্ন। নিজস্ব চিত্র
মাঝে ব্যবধান মাত্র পাঁচ দিনের। রাজ্যের কারা প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরির বিধানসভা এলাকায় যে মাঠে জনসভা করেছিলেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। আক্রমণ শানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সেই মাঠেই বৃহস্পতিবার পাল্টা জনসভায় মোদীকে আক্রমণ করে ‘জবাব’ দিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল।
এদিনের কর্মসূচিতে শাসক দলের মূল আকর্ষণ ছিলেন আসানসোলের তারকা-সাংসদ শত্রুঘ্ন সিংহ। তবে বক্তৃতায় সবাইকে ছাপিয়ে যান স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের কারা প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম ধরেই কুরুচিকর মন্তব্য করেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রামনগরের স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের মাঠে জনসম্পর্ক সভা করেছিল বিজেপি। সেখানে জে পি নড্ডা এবং সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তৃণমূল সরকারের অপশাসন এবং দুর্নীতির ইস্যুতে সরব হয়েছিলেন। সেই কুৎসা এবং অপপ্রচারের জবাব দিতে একই মাঠে পাল্টা জনসভা করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে মন্তব্য করে মাস দু’য়েক আগে গোটা দেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন অখিল। এমনকি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তা নিয়ে অখিলকে কটাক্ষও করেছিলেন। এদিন তার জবাবে অখিল বলেন, ‘‘সেদিন নন্দীগ্রামে ভুলবশত বলে ফেলেছিলাম। তৎক্ষণাৎ আমি সমাজমাধ্যমে ক্ষমা চেয়ে নিই। আমার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ক্ষমা চেয়েছেন। অথচ কয়েক দিন আগে বিধানসভায় অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যে ভাষায় অপমান করেছেন তারপরে তাঁকে সাসপেন্ড বলে ঘোষণা করা হয়েছিল বিধানসভার তরফে। কিন্তু মানবিক মুখ্যমন্ত্রী শুভেন্দুর হয়েও স্পিকারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন।’’
বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘‘কখনও রাষ্ট্রপতি, কখনও দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অসম্মান করছেন রাজ্যের একজন মন্ত্রী। অথচ তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছে না। আসলে এটাই নতুন তৃণমূলের সংস্কৃতি।’’
এদিনও বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে গদ্দার বলে কটাক্ষ করার পাশাপাশি সাংসদ শিশির অধিকারীকেও আক্রমণ করেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল কর্মীদের আবেগের উপরে নির্ভর করে সংসদ হয়েছিলেন শিশির অধিকারী। এমন বেইমানি করেছেন যে এখন মাথা উঁচু করে বলতে পারেন না উনি কোন দলের সাংসদ।’’ শত্রুঘ্ন সিংহ ব্যাখ্যা দেন কেন তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আসানসোলের সাংসদ বলেন, ‘‘অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময় এনডিএ জোটের শরিক ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে সময় পার্টিতে গণতন্ত্র ছিল। এখন শুধু অহংকারে চলছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’
তৃণমূলের পাল্টা জনসভাকে কটাক্ষ করে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তাপস দোলই বলেন, ‘‘তৃণমূল ভয় পেয়ে এদিন সভা ডেকেছে। অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে বাস, গাড়ি ভাড়া করে লোক এনেছে। তৃণমূলের সভা ফ্লপ।’’