সভার মাঠ নিয়ে টানাপড়েনের পর শেষে হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে সোমবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ওই মাঠে সভা করেন। ফাইল ছবি।
ঝাঁকরায় বিজেপির পাল্টা সভায় ঐতিহাসিক সমাবেশ করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। সভার মাঠ নিয়ে টানাপড়েনের পর শেষে হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে সোমবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ওই মাঠে সভা করেন। তা শেষ হতেই পাল্টা সভার প্রস্তুতি শুরু করে দেয় তৃণমূল।
মঙ্গলবার চন্দ্রকোনায় প্রস্তুতি বৈঠকও করেছে তারা। ৭ এপ্রিল ঝাঁকরার স্কুল মাঠে বিজেপির থেকে অন্তত পাঁচগুণ জমায়েতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি, ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইত, চন্দ্রকোনার বিধায়ক অরূপ ধাড়া, চন্দ্রকোনা শহর সভাপতি প্রদীপ সাঁতরা-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত বলছেন, “ঝাঁকরার সভা হবে ঐতিহাসিক। বিরোধী দলনেতার সভার অন্তত পাঁচগুণ লোক জমায়েত করা হবে। সবাই আসবেন শুধু চন্দ্রকোনা বিধানসভা থেকে। চন্দ্রকোনায় এসে বিরোধী দলনেতার সব কুকথার যোগ্য উত্তর দিতে তৈরি চন্দ্রকোনা।”
ঝাঁকরা স্কুলমাঠে শুভেন্দুর সভার অনুমতি নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর শুরু হয়েছিল। সমান্তরাল ভাবে তৃণমূলের গোষ্ঠী রাজনীতি সামনে এসেছিল। যে স্কুলের মাঠ ঘিরে এত হইচই, সেই ঝাঁকরা হাইস্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি হীরালাল ঘোষ চন্দ্রকোনা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও। গোষ্ঠী রাজনীতিতে হীরালাল আবার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ ধাড়ার বিরোধী শিবিরের লোক বলে পরিচিত। অন্য দিকে অরূপ অনুগামী হলেন তৃণমূলের চন্দ্রকোনা-২ ব্লক সভাপতি প্রসূন ঘোষ এবং চন্দ্রকোনা শহর সভাপতি প্রদীপ সাঁতরা। ফলে, প্রথমে মাঠের অনুমতি নিয়ে হীরালালের তলে তলে ‘সমর্থন’ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের অন্দরে। এ নিয়ে রীতিমতো চর্চা চলছে ঝাঁকরায়।
এই বিতর্কে কার্যত কোণঠাসা হীরালাল। মঙ্গলবারের প্রস্তুতি বৈঠকে থাকলেও ঝাঁকরায় সভার প্রস্তুতিতে তাই মাঠে নেই হীরালাল। দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে এ দিন হীরালাল বলেন, “সভা হবে শুনেছি। কিন্তু আমাকে কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। মাঠের অনুমতি নিয়েও আমাকে কিছু জানানো হয়নি।” তৃণমূলের চন্দ্রকোনা ২ ব্লক সভাপতি প্রসূন বলছেন, “নিয়ম মেনেই মাঠের অনুমতির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।”
সোমবার ঝাঁকরার সভামঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সবর্ভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করেই আক্রমন করেন শুভেন্দু। ‘নো ভোট টু মমতা’ স্লোগান তোলেন। সঙ্গে জানান, আগামী লোকসভা ভোটে আরামবাগ লোকসভা (চন্দ্রকোনা বিধানসভা এই লোকসভার অধীন) বিজেপির দখলে যাবে। ৭ এপ্রিল ঝাঁকরার সভা থেকে এ সবেরই জবাব দিতে তৎপর তৃণমূল।