HS Examination 2023

পরীক্ষার দিনেই জোড়া কর্মসূচি যুযুধানের

জমি আন্দোলনকে হাতিয়ার করেই রাজ্যে পালাবদল হয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তৃণমূলের উদ্যোগে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে নন্দীগ্রাম দিবস পালন করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৩ ০৯:১৫
Share:

উচ্চমাধ্যমিকের দিন কর্মসূচী। প্রতীকী চিত্র।

আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। আর পরীক্ষার দিন নন্দীগ্রামে জোড়া কর্মসূচি তৃণমূল এবং বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালনে যুযুধান যেভাবে আসরে নেমেছে, তাতে শিক্ষকমহল এবং অভিভাবকদের একাংশের প্রশ্ন, শিক্ষা কি সত্যিই গৌন হয়ে যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে! যদিও দুই শিবিরের দাবি, পরীক্ষার্থীদের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য মাইক ছাড়া কর্মসূচি পালন করা হবে।

Advertisement

জমি আন্দোলনকে হাতিয়ার করেই রাজ্যে পালাবদল হয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তৃণমূলের উদ্যোগে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে নন্দীগ্রাম দিবস পালন করা হয়। তৎকালীন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নেতৃত্বে দেখা যেত সে সময়। পরে শুভেন্দু দলবদলের পরে তিনি আলাদা ভাবে দিনটি পালন করে। এবার ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালনের জন্য সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা অবধি নন্দীগ্রামের গোকুলনগরের অধিকারী পাড়ার আগাম অনুমতি নিয়ে রেখেছিল ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির তৃণমূলপন্থী সদস্যরা। তাই সেখানে বিজেপি পন্থী ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সভা করার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতারা। সোমবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা জানা, ওই একই স্থানে সকাল ৮ থেকে বেলা ১০টা অবধি বিজেপি কর্মসূচি পালন করতে পারবে। তার পরে তৃণমূলের কর্মসূচি হবে।

যুযুধান দুই রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচির জন্য অনুমতি পেলেও প্রশ্ন উঠেছে অন্য জায়গায়। নন্দীগ্রামের ভাঙাবেড়া এবং অধিকারী পাড়ায় শহিদ বেদীর অল্প দূরেই রয়েছে একাধিক স্কুল। যার কোনওটি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার কেন্দ্র। আবার কোথাও একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা হচ্ছে। সকালে গেরুয়াপন্থীদের কর্মসূচি তে হাজির থাকার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরর। আর যে সময়ে ওই অনুষ্ঠান, তখনই পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে বা স্কুলে যাওয়ার কথা। ফলে বিরোধীর দলনেতার অনুগামী এবং তাদের জমায়েতে রাস্তাঘাটে যাতায়াতে অসুবিধার একটি প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

ভাঙা বেড়ার শহিদ বেদি থেকে অধিকারী পাড়া আসার পথেই রয়েছে সোনাচূড়া কে সি মিলন বিদ্যাপীঠ। সেখানে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা চলছে। আবার গোকুলনগর, সোনাচূড়া এলাকার পরীক্ষার্থীদের উচ্চ মাধ্যমিকের কেন্দ্র পড়েছে নন্দীগ্রাম বাজারের নন্দীগ্রাম বি এম টি শিক্ষা নিকেতনে। এলাকার সব ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকদের পরীক্ষা কেন্দ্র যেতে ব্যবহার করতে হবে হয় সোনাচূড়া বা নন্দীগ্রাম-তেখালি সড়ক। আর অধিকারী পাড়ার শহিদ বেদী পার করেও বহু পড়ুয়াকে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে। অথচ পরীক্ষার প্রথম দিনই ওই এলাকায় রাজনৈতিক জমায়েত হওযায় শঙ্কিতঅভিভাবকদের একাংশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, ‘‘গত ১০ মার্চ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ডিএ-র দাবিতে ধর্মঘটের বিরোধিতা করতে গিয়ে যে তৃণমূল নেতারা ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত নিয়ে এত উদ্বেগ প্রকাশ করলেন, এখন দেখছি সে সব মায়াকান্না ছিল। জীবনের বড় পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে যে পড়ুয়ারা, তাদের পথ মসৃণ রাখতে কোনও ফাঁকা স্থানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যেতে পারত না?’’ এক পরীক্ষা ব্যবস্থাপকও বলছেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের পথ এড়িয়েই এই ধরনের অনুষ্ঠান করতে পারলে ভালো হত। বিশেষ করে সোনাচূড়া থেকে গোকুলনগরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া রাস্তাটি সংকীর্ণ।’’

উভয় রাজনৈতিক শিবিরেই জানিয়েছে, তারা কোথাও মাইক ব্যবহার করবে না। ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির (তৃণমূলপন্থী) গোকুলনগর অঞ্চল সভাপতি স্বদেশরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘শ্রদ্ধাঞ্জলি এমন করে পালন করা হবে, যাতে ছাত্রছাত্রীদের কোনও অসুবিধা না হয়। পুরো রাস্তা জুড়ে অনুষ্ঠান হবে না।’’ আর বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক মেঘনাদ পালের কথায়, ‘‘মাইক ব্যবহার করা হবে না। খুব বেশি জনসমাগমও করাহবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement