রামনগরে পথ অবরোধ বিজেপির। —ফাইল চিত্র।
শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও বেলা গড়াতেই অশান্তি দেখা গিয়েছিল কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের ভোটে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রামনগরে হাতাহাতিতে জড়িয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি। পদ্মশিবিরের অভিযোগ, তৃণমূল ভোটারদের বুথে যেতে বাধা দিচ্ছে। প্রতিবাদ করায় বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। সেই অভিযোগ তুলে এ বার ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে পথ অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। পরে পুলিশ এসে অবরোধ তুললেও এলাকায় উত্তেজনা কমেনি। তবে দুপুর ২টোয় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। একটু পরেই শুরু হবে গণনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রামনগর কলেজে কাঁথি সমবায় ভোটের কেন্দ্র হয়েছে। সকাল থেকেই আঁটসাঁট নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে এই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। তবে বিজেপির অভিযোগ, তাদের দলের লোকদের বুথে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ভোটার স্লিপ কেড়ে নিচ্ছেন তৃণমূলের কর্মীরা। শুধু তা-ই নয়, বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের মারধরও করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে বুথে যাওয়ার রাস্তায় অবরোধ শুরু করেন বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপি নেতা তপন মাইতির অভিযোগ, “আমাদের কর্মীরা যখন বুথে ভোট দিতে যাচ্ছেন, তখন বেছে বেছে তাঁদের হাত থেকে কুপন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ভোটার কার্ড কেড়ে নিয়ে বুথে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বেশ কয়েক জনকে মারধর করে বুথে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, “সবটাই ঘটছে পুলিশের সামনে।’’ রাস্তা অবরোধ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতার দাবি, ‘‘প্রশাসন সবার ভোট দেওয়া নিশ্চিত করলে তবেই আমরা অবস্থান সরাব।’’
বিজেপির অবরোধের জেরে রামনগর বুথ কেন্দ্রের অদূরে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় রামনগর থানার পুলিশ। দীর্ঘ ক্ষণ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ আধিকারিকেরা। পরে নিরাপত্তার আশ্বাস মেলার পরই পথ অবরোধ তুলে নেয় বিজেপি।
যদিও বিজেপির অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরি। তাঁর দাবি, “রামনগরে কোনও অশান্তির খবর নেই। ভোট বানচাল করার জন্য বিজেপি মিথ্যে অভিযোগ তুলে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট সম্পন্ন করতে চাইছি।’’ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানো নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন অখিল। তাঁর কথায়, “ভারতে প্রথম বার একটি সমবায় নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করা হচ্ছে। এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত লজ্জার। বিজেপির কিছু নেতা উস্কানি দিচ্ছেন। আদালতের হস্তক্ষেপে কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে ভোট করানো হচ্ছে।’’ তবে ভোটে জেতার ব্যাপারে আশাবাদী অখিল।
ভোটের মুখে পাঁচটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বদল করেছিল ‘কো-অপারেটিভ ইলেকশন কমিশন’। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ওই পাঁচ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের নিরাপত্তায় রয়েছে আধা সেনা। এ ছাড়াও ১৪টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে মোট ৩০০ সিসি ক্যামেরায় নজরদারি থাকছে। প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। প্রতিটি কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ৬০ থেকে ৮০ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন রয়েছে। বেশ কয়েকটি এলাকা স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।