Coronavirus

বিজেপির ত্রাণ নেওয়ায় মারধর, অভিযুক্ত তৃণমূল

অভিযোগ, আমদাবাদ ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্বপল্লি এলাকার সংখ্যালঘু মানুষজন বিজেপির কাছ থেকে ত্রাণ গ্রহণ করেছেন, এই ‘অপরাধে’ মঙ্গলবার তাঁদের মারধর করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০৪:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

ইদের জন্য উপহার পাঠানোকে কেন্দ্র করে ‘বিক্ষোভে’র মুখে পড়তে হয়েছিল তৃণমূল নেতাদের। উপহার না দিয়েই ফিরতে হয়েছিল শাসক দলের লোকজনকে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব তা স্বীকার করেননি। সোমবার নন্দীগ্রামের বিরুলিয়ায় ওই ঘটনার পর মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে বিজেপির তরফে ত্রাণ বিলি করতে গেলে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার অভিযোগ উঠল। অভিযোগের তির শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। ফলে ইদের উপহার থেকে ঘূর্ণিঝড়ে দুর্গতদের ত্রাণ বিলি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরে উত্তপ্ত হল জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর।

Advertisement

অভিযোগ, আমদাবাদ ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্বপল্লি এলাকার সংখ্যালঘু মানুষজন বিজেপির কাছ থেকে ত্রাণ গ্রহণ করেছেন, এই ‘অপরাধে’ মঙ্গলবার তাঁদের মারধর করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। সোমবার ওই এলাকায় বিজেপির পক্ষ থেকে ইদের জন্য ত্রাণ সরবরাহ করা হয়। তারপরই এ দিন সকালে স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য জাহানারা খাতুনের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের রড ও বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানো হয়। ১১ জনকে রেয়াপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হতে হয়। এঁদের মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ৭ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চারজন এখনও চিকিৎসাধীন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেখ রকিবুলের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কোনও ত্রাণ আসেনি। লকডাউন এবং আমপানের চাপে মানুষ খেতে পাচ্ছে না। তাই বিজেপির পক্ষ থেকে দেওয়া ত্রাণ সবাই নিয়েছে। বিজেপির দেওয়া ত্রাণ কেন নিয়েছি, সেই অপরাধে তৃণমূলের লোকজনের হাতে মার খেতে হল।’’ আর এক বাসিন্দা শেখ আজিদ বলেন, ‘‘শাসকদলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বিজেপির দেওয়া ত্রাণ কেন নিয়েছি জানতে চেয়ে ভয় দেখায়। মহিলাদেরও ওরা মারধর করেছে।’’

বিজেপির তমলুক জেলা সাংগঠনিক সহ সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘‘করোনায় লকডাউন ও মআমপানের জেরে এলাকায় মানুষ খাবার পাচ্ছিলেন না। আমফান মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও কেড়ে নিয়েছে। পানীয় জলেরও প্রচণ্ড সমস্যা রয়েছে। তাই পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং কিছু খাদ্যসামগ্রী ওই এলাকার মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছি বলে ওঁরা আমাদের প্রশংসা করছেন। তাই তৃণমূল নেতৃত্ব ধৈর্য হারিয়েছে। আসলে নন্দীগ্রামে তৃণমূল পায়ের তলার মাটি হারিয়ে ফেলছে বলেই বারবার সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ শানাচ্ছে। আর মুখ্যমন্ত্রী মুখে ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি না করার কথা বলছেন।’’

Advertisement

তবে এ সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের নন্দীগ্রাম বিধানসভার চেয়ারম্যান মেঘনাথ পাল বলেন, ‘‘মানুষের বিপদে যে কোনও রাজনৈতিক দল সাহায্য করতে পারে। এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে দল তা সমর্থন করে না।’’

রাজনৈতিক মহলের মতে, সংখ্যালঘু ইস্যুতে বার বার নন্দীগ্রামে বিপাকে পড়ছে তৃণমূল। সংখ্যালঘু তোষণ নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠছিল দেখা যাচ্ছে সেই সংখ্যালঘুরাই তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করছেন। তাঁদের যে রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে তা তাঁরা উপলব্ধি করতে পারছেন। খোদ পরিবহণ মন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় বার বার এমন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে রাজ্য তথা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

একদা রাজনৈতিক পালাবদলের মূল কেন্দ্র ছিল নন্দীগ্রাম। সেই নন্দীগ্রামই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ফের প্রভাব ফেলতে চলেছে বলে বিজেপির দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement