বৃষ্টিতে নীল তিমি ধুয়ে সাদা

স্থানীয় উত্তর বামদা এলাকার ওই পুজো এ বার ৪৮তম বছরে পা দিয়েছে। থিম— বাহুবলী। পূর্ব মেদিনীপুরের এক শিল্পীকে দিয়ে কোলাজ করানো হয়েছে দক্ষিণী ফিল্মের নানা মুহূর্ত। বৃষ্টি এসে নষ্ট করেছে সব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম ও তমলুক শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩৭
Share:

পণ্ড: নন্দকুমারের একটি পুজোয় বসেছিল মেলা। জল থৈ-থৈ মাঠে সবই নষ্ট হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

প্রবল বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছে মাহেশমতীর রাজ্য— কাটাপ্পা, বাহুবলীদের সামলাতে হিমসিম ঝাড়গ্রামের ক্লাব সদস্যরা।

Advertisement

স্থানীয় উত্তর বামদা এলাকার ওই পুজো এ বার ৪৮তম বছরে পা দিয়েছে। থিম— বাহুবলী। পূর্ব মেদিনীপুরের এক শিল্পীকে দিয়ে কোলাজ করানো হয়েছে দক্ষিণী ফিল্মের নানা মুহূর্ত। বৃষ্টি এসে নষ্ট করেছে সব।

বৃহস্পতিবার, কালীপুজোর দিন থেকেই আকাশের মুখ ছিল ভার। রাতে পুজো শুরু আগেই শুরু হয় বৃষ্টি। ভোরের আলো ফুটতেই ঝাড়গ্রাম শহরের থিম পুজোর উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত! শুক্রবার দুপুরে ঝিরঝিরে বৃষ্টি মাথায় ক্লাবের মাঝ বয়সী সদস্য রাজু সরকার, নৃপেন মাহাতো, তাপস শীল-রা পুট্টি আর রং গুলে মণ্ডপ মেরামতিতে নেমে পড়েছিলেন। তাঁদের কথায়, ‘‘শিল্পীকে এখন কোথায় পাব? নিজেরাই যতটা পারছি চেষ্টা করছি।’’

Advertisement

বলরামডিহির একটি ক্লাবের পুজোর থিম ‘অ্যান্টি ব্লু হোয়েল’। মণ্ডপের সামনে বাঁশের কাঠামোর উপর চট ও সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে তৈরি হয়েছে বিশাল নীল তিমি। অ্যাকোরিয়ামের আদলে মণ্ডপ, ভিতরে প্রতিমা। রাতভর বৃষ্টিতে রং ধুয়ে গিয়ে নীলতিমি সাদা তিমি হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার ফের শিল্পী অভিজিৎ দত্ত নীল রং স্প্রে করছেন। পুজো কমিটির সদস্য অঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘এ বার বিশেষ স্থায়ী রং করা হয়েছে, আর ধুয়ে যাবে না। তবে প্রায় তিরিশ শতাংশ খরচ বেড়েছে।’’

বলরামডিহিরই আর একটি পুজোর থিম ‘অগ্নিকন্যা’। থিমের বিষয়বস্তু নারীর ক্ষমতায়ন। বাঁশ, থার্মোকল, ফোম দিয়ে দৃষ্টিনন্দন মণ্ডপের সামনে দাঁড়িয়ে শিল্পী সুব্রত পালের আক্ষেপ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় কাজটা শেষ করতে পারলাম না। রবীন্দ্র উদ্যানের ভিতরে আয়োজিত একটি পুজোয় পঞ্চাশভূজা কালী দেখার জন্য বৃহস্পতিবার বৃষ্টির মধ্যেও লোকজন এসেছিলেন। তবে শুক্রবার বাতিল করতে হয় শিশুদের বসে আঁকো এবং কুইজ। বাতিল করা হয় সর্বসাধারণের জন্য অন্নভোগের আয়োজনও।

পুরাতন ঝাড়গ্রাম এলাকার কালীপুজোর বিশেষ আকর্ষণ ছিল জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি। কিন্তু বৃষ্টিতে অগ্নুৎপাতের কৌশলই বিগড়েছে। তবে বৃষ্টি মাথায় করেও দর্শক নেমেছিলেন মণ্ডপ দর্শনে।

বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পুজোও। বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাতে গোনা কয়েকটি মণ্ডপে দর্শকদের ভিড় হলেও অধিকাংশ মণ্ডপই ছিল ফাঁকা। শুক্রবার সারাদিন বৃষ্টি, ফলে বেশির ভাগ পুজো উদ্যোক্তাই তাঁদের নির্দিষ্ট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন।

বৃহস্পতিবারের বৃষ্টির মধ্যেই তমলুক হাসপাতাল মোড়ের একটি ক্লাবের পুজো উদ্বোধন করে গিয়েছেন টলি-তারকা অঙ্কুশ ও রুক্মিণী। কিন্তু শুক্রবার শিল্পী সোমলতার গান ও কলকাতার একটি নামী নাচের দলের অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হন উদ্যোক্তারা। ছোটদের বসে আঁকো প্রতিযোগিতাও বাতিল করে রবিবার করা হয়েছে। অনুষ্ঠান বাতিল হয়েছে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের নোনাকুড়ি বাজার ও নন্দকুমার ফুটবল ময়দানের একটি পুজোয়ও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement