উপহার হিসেবে দেওয়া হল চটের ব্যাগ। নিজস্ব চিত্র
পরিবেশ ভাল রাখতে সারা বছর ধরেই চারা বিলি হবে। শনিবার মেদিনীপুরে পরিবেশ মেলার উদ্বোধনে এসে এ কথা জানিয়েছেন পরিবেশমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘বনসৃজন শুধু জুলাই মাসের ১৪ থেকে ২০ তারিখ নয়। এ বার থেকে সারা বছর পরিবেশ দফতর গাছের চারা বিতরণ করবে।’’ পরিবেশ মন্ত্রী এ দিন গাছের চারা বিলিও করেন।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় পরিবেশ মেলা এই প্রথম। শনিবার থেকে এই মেলা শুরু হয়েছে মেদিনীপুর শহরের কলেজ- কলেজিয়েট স্কুল মাঠে। ছিলেন জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী, জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া প্রমুখ। সেখানে শুভেন্দু জানান, এ বার প্রতিটি জেলায় পরিবেশ মেলা হচ্ছে। পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘পরিবেশ দফতরের পক্ষ থেকে আমরা শারদ উৎসবে ‘গ্রীন অ্যাওয়ার্ড’ দিয়েছি।’’ তাঁর ঘোষণা, ‘‘আগামী বছর প্রত্যেক মহকুমায় এই মেলা হবে। মেলার মাধ্যমে সচেতনতা প্রচার চলবে।’’
সকলকে পরিবেশ নিয়ে আরও সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়ে পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, ‘‘কঠিন আইন তো রয়েছে। কিন্তু সেই আইনের প্রয়োগে অনেক সমস্যা থাকে। মানুষকে সচেতন হতে হবে। একটা গাছ কাটলে যদি পাঁচটা গাছ লাগান, একটা জলাভূমি ভরে গেলে যদি আরেকটা জায়গায় তার দ্বিগুণ জলাভূমি করতে পারেন, তাহলে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় কাজ।’’ পরিবেশ মন্ত্রীর স্বীকারোক্তি, ‘‘বায়ূদূষণ, দৃশ্যদূষণ, জলদূষণ মারাত্মক জায়গায় চলে গিয়েছে। বিভিন্ন রোগের মূলে রয়েছে সেই দূষণ।’’
মেদিনীপুরে পরিবেশ দফতরের অফিস হবে বলে জানিয়ে শুভেন্দু জানান, আগামী সপ্তাহে ওই অফিস উদ্বোধন হয়ে যাবে। শনিবার ছিল বিশ্ব জলাভূমি সংরক্ষণ দিবস। বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেই কথাও স্মরণ করিয়ে দেন পরিবেশমন্ত্রী। প্লাস্টিক ঠেকাতে পাটের ব্যাগ ব্যবহারের উপরেও গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। জানান, হুগলির উত্তরপাড়া পুরসভা সব বাড়িতে পাটের ব্যাগ পৌঁছে দিয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া পুরসভা সব বাড়িতে পাটের ব্যাগ পৌঁছে দিয়েছে। কাঁথি পুরসভাকে আমরা ২৫ হাজার পাটের ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুর পুরসভা উদ্যোগ নিলে তাদেরও পাটের ব্যাগ দেওয়া হবে।
জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, ‘‘এমন মেলা থেকে মানুষ আরও সচেতন হবেন।’’ জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘পরিবেশ ভাল রাখার কী গুরুত্ব সেটা আমাদের সকলকে আরও ভালভাবে বুঝতে হবে।’’ ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, সহ- সভাধিপতি অজিত মাইতি। পরিবেশ নিয়ে সচেতন করতে পদযাত্রাও হয় এ দিন। সেখানে পা মেলায় স্কুল পড়ুয়ারা।
মেলার কয়েকটি স্টলকে প্লাস্টিকের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। সেই ফুল কতটা পরিবেশ বান্ধব সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশপ্রেমীদের একাংশ। জেলা পরিষদের পরিবেশ বিষয়ক কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বলেন, ‘‘তাড়াহুড়োর জন্য বিষয়টি আমাদের চোখ এড়িয়ে গিয়েছে।’’