প্রতীকী ছবি।
পুরএলাকায় আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলরের দুই ছেলের নাম থাকায় বিতর্ক দেখা গিয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, পাকাবাড়ির কোনও ক্ষতি না হলেও ক্ষতিপূরণের তালিকায় নাম রয়েছে পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বিদায়ী কাউন্সিলর তথা বর্তমানে ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর রঞ্জিতা জানার দুই ছেলে কুশ্বধ্বজ ও নবকুমারের। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রকাশের পরেই যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিতর্কের জেরে দু’জনেই তমলুকের মহকুমাশাসকের কাছে সরকারি সাহায্যের টাকা না নেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। ঘটনার জেরে বিজেপি ও কংগ্রেস ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে। শনিবার পুরসভায় বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডল কমিটির তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তার তারপরেই রবিবার বিদায়ী কাউন্সিলার তথা ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর-এর পদ থেকে রঞ্জিতাকে সাসপেন্ড করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুর প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন চিঠি পাঠিয়ে রঞ্জিতাকে সাসপেন্ড করার কথা জানিয়েছেন।
রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘আমপানে বাড়ির কোনও ক্ষতি না হওয়া সত্ত্বেও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় রঞ্জিতাদেবীর দুই ছেলের নাম থাকার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সে জন্যই ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটরের পদ থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। নতুন ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক হিসেবে আমিই ওই দায়িত্ব পালন করব।’’ রঞ্জিতা বলেন, ‘‘পুর প্রশাসকের চিঠি পেয়েছি। ছেলেরা ভুল করেছিল। টাকা নেব না বলে ইতিমধ্যেই মহকুমাশাসককে জানিয়েছি। আগামীকাল পুরপ্রশাসককেও জানিয়ে দেওয়া হবে।’’
পুরসভা ও দলীয় সূত্রে খবর, ২০১০ সালে পুর নির্বাচনে বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে জিতে কাউন্সিলর হয়েছিলেন রঞ্জিতা। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৫ সালে পুরসভার নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন রঞ্জিতা। তৃণমূল পরিচালিত তমলুক পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৯ মে। করোনার জন্য পুরনির্বাচন না হওয়ায় প্রশাসক নিয়োগ করেছে রাজ্যের পুর-নগরোন্নয়ন দফতর। করোনা ও আমপান পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসককে সাহায্যের জন্য রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে বিদায়ী কাউন্সিলরদের ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর পদে নিযুক্ত করা হয়েছে।
তমলুক শহর কংগ্রেসের নেতা শেখ জিয়াদ বলেন, ‘‘আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় অনেক ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তদের নাম রয়েছে। রঞ্জিতাদেবীকে ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর পদ থেকে সাসপেন্ড করে পুর কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় দুর্নীতির কথা কার্যত স্বীকার করে নিলেন। আমরা চাই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত যারা তালিকা থেকে বাদ পড়েছে পুনরায় তদন্ত করে তাদের সরকারি সাহায্য দেওয়া হোক।’’