Coronavirus

আসেনি চুড়ান্ত রিপোর্ট, শহরে হল না কনটেনমেন্ট জ়োন

শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পুরসভারই এক ঠিকাদার অসুস্থ হয়ে গত শনিবার ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মেল মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২০ ০৪:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

আক্রান্তের করোনা পরীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্ট আসেনি। তাই ঝাড়গ্রাম শহরে ‘কনটেনমেন্ট জ়োন’ করা হবে কী হবে না, সে ব্যাপারে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সিদ্ধান্তই নিতে পারল না পুরসভা!

Advertisement

শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পুরসভারই এক ঠিকাদার অসুস্থ হয়ে গত শনিবার ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মেল মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন। রবিবার হাসপাতালের ট্রু-ন্যাট যন্ত্রে ওই রোগীর করোনার প্রাথমিক পরীক্ষা হয়। সেখানে রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ায় রবিবার রাতেই বছর ষাটের ওই রোগীকে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে সোমবার নমুনা সংগ্রহের কথা থাকলেও তা হয়নি। মঙ্গলবার নমুনা সংগ্রহ করে চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে পাঠানো হয়। এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত রিপোর্ট আসেনি। ওই রোগীর ভাইপো বলেন, ‘‘পরিবারের লোকজন কাকুকে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে চাইছেন। কিন্তু চূড়ান্ত রিপোর্ট না পাওয়া গেলে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো সম্ভব নয়। তাই আমরা অপেক্ষা করছি।’’

ওই ঠিকাদার কয়েকদিন আগে পুরসভায় কাজের সূত্রে গিয়েছিলেন। সেই কারণে সোম ও মঙ্গলবার পুরভবন সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ রেখে জীবাণুমুক্ত করা হয়। মঙ্গলবার তিন তলা পুরভবনের প্রতিটি বিভাগ এবং এক তলার মার্কেট কমপ্লেক্সটি জীবাণুমুক্ত করা হয়। ওই রোগী ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এদিন ওই এলাকার কিছু দোকান বন্ধ ছিল। তাঁর বাড়ির সংলগ্ন এলাকাকে ‘কনটেনমেন্ট জ়োন’ ঘোষণার দাবি করেছেন সেখানকার একাংশ বাসিন্দা।

Advertisement

শহরে ‘কনটেনমেন্ট জ়োন’ হবে কি-না তা নিয়ে মঙ্গলবার আলোচনায় বসেন পুরসভার প্রশাসক সুবর্ণ রায় ও পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক তুষারকান্তি শতপথী। কিন্তু চূড়ান্ত রিপোর্ট পুরসভার হাতে না আসায় সিদ্ধান্ত হয়নি। ওই ব্যক্তি এলাকার যাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদের নামের তালিকা তৈরি হলেও তাঁদের নিভৃতবাসে পাঠানোও সম্ভব হয়নি।

পুর-প্রশাসক ও নির্বাহী আধিকারিক কেউই মুখ কুলতে চাননি। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে ‘কনটেনমেন্ট জোন’ ঘোষণা হলে পুর-প্রশাসককে ‘ইনসিডেন্ট কম্যান্ডার’-এর দায়িত্ব দেওয়া হবে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর গোবিন্দ সোমানি বলেন, ‘‘চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরেই পুরসভার তরফে পদক্ষেপ করা হবে। এলাকাবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে।’’ কনটেনমেন্ট জ়োন কী করা হবে? গোবিন্দের বক্তব্য, ‘‘সেটা পুরসভা ঠিক করবে।’’

এখনও ওই রোগীর বাড়ি ও সংলগ্ন এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। শহরবাসীর একাংশের দাবি, ওই রোগীর চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার আগেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কারণ চূড়ান্ত রিপোর্ট যদি পজ়িটিভ হয়, তাহলে দেরিতে রিপোর্ট আসার জন্য এলাকার সাধারণ মানুষকেই মাসুল দিতে হবে। তাঁর পরিবারের লোকজন ছাড়াও তিনি যাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করে পরীক্ষারও দাবি উঠেছে।

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের অবশ্য ব্যাখা, জেলায় এর আগে কোথাও কনটেনমেন্ট জ়োন করা হয়নি। ফলে শহরে এমন পদক্ষেপ করতে হলে তার স্বপক্ষে উপযুক্ত কার্যকারণ থাকতে হবে। তাঁর দাবি, জেলায় করোনার প্রকোপ নেই। এ পর্যন্ত ২৫ জনের উপসর্গহীন করোনা ধরা পড়েছে। যাঁদের মধ্যে ১৯ জন সুস্থ। বাকিরা সরকারি নিভৃতবাসে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement