বাতাসের দূষিত কণা থেকেও হতে পারে চর্মরোগ। প্রতীকী ছবি।
বায়ুদূষণ জটিল চর্মরোগের কারণ হতে পারে, এমনটাই দাবি করা হয়েছে একটি গবেষণায়। ব্রিটেনের বায়োব্যাঙ্ক দাবি করেছে, বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা (পিএম১০) ও অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম ২.৫) মাত্রা বাড়লে তা ত্বকের রন্ধ্র দিয়ে ঢুকে জটিল চর্মরোগের কারণ হতে পারে। সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগের অন্যতম বড় কারণ বায়ুদূষণ। দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়া মানে হল বাতাসে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, নাইট্রিক অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইডের মাত্রাও বেড়ে যাওয়া। এই সব বিষাক্ত গ্যাসও ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য চরম ক্ষতিকর।
ত্বকের অ্যালার্জি, কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিসের মতো অসুখ যাঁদের আছে, তাঁরা বেশি দিন দূষিত পরিবেশে থাকলে ত্বকের অসুখ আরও বেড়ে যাবে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে সোরিয়াসিসের রোগীদের। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, বাতাসে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে গেলে ত্বকের প্রদাহ আরও বাড়বে। সোরিয়াসিসের রোগীদের ত্বকে চুলকানি, জ্বালা-যন্ত্রণা ভয়ানক বেড়ে যাবে। আঁশের মতো খসখসে হয়ে যাবে ত্বক, চামড়া উঠতে শুরু করবে।
এই অসুখে শরীরের বিভিন্ন অংশে গোল গোল ও এবড়োখেবড়ো চাকার মতো দাগ তৈরি হয় ও সেখানকার ত্বক থেকে মাছের আঁশের মতো খোসা উঠতে থাকে। জায়গাটা খসখসে হয়ে যায় ও চুলকাতে থাকে। ধীরে ধীরে এই অসুখে আক্রান্ত স্থানের রং বদল হয়। কখনও তা লালচে হয়, আবার কখনও একটু কালচে ছোপের মতো দেখায়। সোরিয়াসিস থাকলে বাইরে বেরোনোর সময়ে ত্বক ঢেকে রাখতেই বলেন চিকিৎসকেরা। কারণ, সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি ও বাতাসে ভাসমান দূষিত কণা এই রোগকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে।
বায়োব্যাঙ্কের গবেষণায় বলা হয়েছে, বাতাসের দূষিত কণা ত্বকের ইমিউন কোষ বা রোগ প্রতিরোধী কোষগুলিকে এমন ভাবে সক্রিয় করে তোলে যে, তারা উল্টে সুস্থ কোষেরই ক্ষতি করে ফেলে। ত্বকে মারাত্মক প্রদাহ শুরু হয়। চুলকানি, র্যাশ বেড়ে যায়। যাঁদের সোরিয়াসিস রয়েছে, তাঁদের দূষণ থেকে ত্বককে বাঁচাতে হলে বাইরে থেকে ফিরে ভাল করে হাত-পা ধুয়ে ময়েশ্চারাইজ়ার লাগাতে হবে। সোরিয়াসিসের রোগীরা খাঁটি চামড়ার জুতো বা ব্যাগ ব্যবহার না করে চামড়া মিশ্রিত ফোম, পাট বা অন্য উপাদানের জিনিস ব্যবহার করুন। সাবান ও শ্যাম্পুও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ব্যবহার করতে হবে। ওষুধ খেয়ে যেতে হবে নিয়মিত। শীতকালে যে হেতু বাতাসে দূষিত কণার পরিমাণ বেড়ে যায়, তাই অসুখের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। তাই শীতে খাওয়াদাওয়া ও ত্বকের যত্নে বাড়তি সতর্ক হতে হবে।