Dilip Ghosh

দিলীপের গ্রামেই সব থেকে বড় রাস্তা, তুঙ্গে চাপানউতোর

গত পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম জেলায় ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। কুলিয়ানা সংসদ ও কুলিয়ানা গ্রাম পঞ্চায়েত দু’টোতেই পদ্ম ফুটেছিল। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০টি আসনের ৮টিতেই জিতেছিল বিজেপি।

Advertisement

রঞ্জন পাল

গোপীবল্লভপুর শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৩ ০৭:৪৪
Share:

ঝাড়গ্রাম জেলার কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে। শালুকগেড়িয়ায়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামীণ রাস্তার হাল ফেরাতে ‘পথশ্রী-রাস্তাশ্রী’ প্রকল্প শুরু করেছে রাজ্য সরকার। ঝাড়গ্রাম জেলায় ওই প্রকল্পে সব থেকে বড় রাস্তাটি হবে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষের গ্রামে।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সারা রাজ্যের সঙ্গে ঝাড়গ্রাম জেলায় ১৫৮টি রাস্তারও ‘ভার্চুয়াল’ শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে লম্বা রাস্তাটি (৩.৮ কিলোমিটার) হবে গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের কুলিয়ানা গ্রাম পঞ্চায়েতের বায়াডাঙর থেকে ভালুকখুলিয়া পর্যন্ত। কুলিয়ানা গ্রামে দিলীপের পৈতৃক ভিটে। সেখানে থাকেন দিলীপের মা পুষ্পলতা ঘোষ ও ছোট ভাই হীরক ঘোষের পরিবার। উল্লেখ্য, গত বিধানসভা ভোটের আগে দিলীপের ভাইপো, ভাইয়ের স্ত্রী এবং তাঁর খুড়তুতো ভাই ও ভাইয়ের পরিবার লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়েছিলেন। তখনও সেই বিষয়টি প্রচারে এনেছিল তৃণমূল। এবারও কুলিয়ানা গ্রামের বড় রাস্তা প্রাপ্তি নিয়েও প্রচার শুরু করেছে তারা। পাল্টা বিঁধে জেলা বিজেপির এক নেতা বলছেন, ‘‘জেলা প্রশাসন রাজনীতি করছে। কারণ দিলীপদার গ্রামে রাস্তা হলেও তাঁর বাড়ি যে রাস্তা দিয়ে যেতে হয়, সেটা পুরোটাই কাঁচা। ইচ্ছে করেই তা সারানো হচ্ছে না।’’ জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডুর দাবি, ‘‘রাস্তাগুলি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় হবে। রাজ্য সরকার সেগুলি নাম বদলে নিজেদের বলে প্রচার করছে।’’

দিলীপ ঘোষ নিজেও বলছেন, ‘‘আমার নিজের বাড়িতে ঢোকার রাস্তা এখনও কর্দমাক্ত। পথের যা শ্রী রয়েছে! শুধু নাম বদলালে হবে না। পরিস্থিতি বদলাতে হবে। ’’ তিনি জুড়েছেন, ‘‘এতদিন রাস্তা করেনি। পঞ্চায়েত নির্বাচন আসায় এসব চমক চলছে। দেখতে হবে যেন নির্বাচনের পরও কাজ না থমকে যায়।’’

Advertisement

গত পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম জেলায় ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। কুলিয়ানা সংসদ ও কুলিয়ানা গ্রাম পঞ্চায়েত দু’টোতেই পদ্ম ফুটেছিল। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০টি আসনের ৮টিতেই জিতেছিল বিজেপি। তৃণমূল ও নির্দল ১টি করে আসন পেয়েছিল। নতুন রাস্তা প্রাপ্তি সেই সমীকরণ বদলাতে পারবে বলেই আশা তৃণমূলের। জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মুর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে জনদরদি এটাই হল তার উদাহরণ। দিলীপ ঘোষের পরিবার তো স্বাস্থ্যসাথী নিয়েছে। বিজেপি নেতাদের মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।’’

যে রাস্তা নিয়ে এত হইচই, শেষ বেলায় তার টেন্ডার নিয়ে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। সেই কারণে এদিন গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের সামগ্রিক রাস্তার শিলান্যাস অনুষ্ঠান বায়াডাঙরে হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। গোপীবল্লভপুর-২ এর বিডিও নীলোৎপল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম ওই রাস্তার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। তাই বায়াডাঙরে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ব্লকের অনুষ্ঠানটি অন্য জায়গায় হয়েছে। তবে ওই রাস্তাটির টেন্ডার প্রক্রিয়া দ্রুত মিটে যাবে।’’ ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, ‘‘জেলার ১৫৮টি রাস্তার সূচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারমধ্যে তিন-চারটি রাস্তার টেন্ডারের সমস্যা রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে মিটে যাবে। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় রাস্তাটি কুলিয়ানা পঞ্চায়েতে তৈরি করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement