টেট শেষে বাস ধরার ভিড় পরীক্ষার্থীদের। রবিবার বিকেলে নন্দকুমার বাস স্ট্যান্ডে। ছবি: শুভেন্দু কামিলা।
একদিকে লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতার ব্রিগেডযাত্রা। অন্য দিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতামান নির্ধারণ পরীক্ষা (টেট)। রবিবার জোড়া কর্মসূচি ঘিরে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে তৎপর হয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন। দিনের শেষে দুই কর্মসূচিই নির্বিঘ্নে মিটল রবিবার।
টেট পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য সরকারি ও বেসরকারি বাসের বন্দোবস্ত করতে আগাম পদক্ষেপ করেছিল জেলা প্রশাসন ও পরিবহণ দফতর। সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকার টেট পরীক্ষার্থীরা বাস ও বিভিন্ন গাড়িতে পরীক্ষা কেন্দ্রে রওনা দেন। যাতায়াতে সমস্যা হয়নি।
পূর্ব মেদিনীপুরে টেট পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল ৫৫টি। আর পরীক্ষার্থী ১৮,২২৩জন। জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, জেলার সব কটি পরীক্ষা কেন্দ্র মিলিয়ে উপস্থিত ছিলেন ১৫,৮৪৬জন পরীক্ষার্থী। হাজিরার হার ৮৬.৯৬ শতাংশ। অনুপস্থিত পরীক্ষার্থী ২,৩৭৭ জন অর্থাৎ ১৩.০৪ শতাংশ। ‘টেট’-এর জন্য জেলা স্তরে গঠিত ডিস্ট্রিক্ট লেভেল মনিটরিং’ কমিটির সদস্য তথা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি হাবিবুর রহমানের মতে, ‘‘প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের এই উপস্থিতির হার স্বাভাবিক। যাঁরা অনুপস্থিত ছিলেন, তাঁদের অনেকে আবেদনের পরে পরীক্ষা দিতে আগ্রহী হননি কিংবা প্রস্তুতি নেননি। আর কিছু পরীক্ষার্থী অন্য পেশায় যুক্ত হয়ে গিয়েছেন। তাই পরীক্ষা দিতে আসেননি।’’ তিনি জানান, পরীক্ষা খুব ভালভাবে হয়েছে।
এ দিন জেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে বেরিয়েছিলেন প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। দুপুর আড়াইটেয় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে সহ পরীক্ষার খাতা সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সেগুলি কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
টেট পরীক্ষা কেন্দ্র হয়েছিল তমলুক শালগেছিয়া হাইস্কুল এবং রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ে। সকালে শালগেছিয়া হাইস্কুলে ছিল পুলিশি নিরাপত্তা। প্রবেশপথের কাছে পরীক্ষার্থীদের বায়োমেট্রিক পরীক্ষা করা হয়। সরকারি নির্দেশিকার বাড়তি কোনও জিনিসপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে রয়েছে কিনা, তাও যাচাই করা হচ্ছে। দু’মাসের শিশুসন্তানকে নিয়ে টেট দিতে এসেছিলেন সুস্মিতা মান্না। তমলুকের দোবান্দি গ্রামের বাসিন্দা সুস্মিতা ও তাঁর স্বামী শোভরাজ বলেন, ‘‘পরীক্ষাণ কেন্দ্রে আসার জন্য বাস পাওয়া যাবে কিনা আশঙ্কায় ছিলাম। তাই সকালেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলাম। তবে বাস পেয়ে যাওয়ায় আসতে অসুবিধা হয়নি।’’
জেলার সব রুটে পর্যাপ্ত বাস চালানো হয়েছে। ছুটির দিন হলেও জেলার তমলুক, হলদিয়া, কাঁথি ও এগরা মহকুমার সব পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নেই যাতায়াত করেছেন । জেলা পরিবহণ আধিকারিক সজল আধিকারী বলেন, ‘‘সরকারি, বেসরকারি সব বাস সকাল থেকেই চলেছে। দফতরের সব ইন্সপেক্টরা রাস্তায় ছিলেন। বাসে যাতায়াতে পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হয়নি। এ নিয়ে কোনও অভিযোগ আসেনি।’’