Indrani Mahato

ইন্দ্রাণী মাহাতোকে নিয়ে টানাপড়েন

আগামী শনি ও রবিবার ঝাড়গ্রাম শহরের রবীন্দ্রপার্কে ঝুমুর মেলা হওয়ার কথা। ইন্দ্রাণী যেহেতু সরকারি জঙ্গলমহল উৎসবে অনুষ্ঠান করেছেন, তাই তাঁকে এ বার সরকারি ঝুমুর মেলার শিল্পী তালিকায় রাখা যাবে না— এমনই দাবি তুলেছে মঞ্চ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:০৮
Share:

ইন্দ্রানী মাহাতো।

ঝুমুরগানের ‘নাইটিঙ্গেল’ ইন্দ্রাণী মাহাতো কি নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন সরকারি ঝুমুর মেলা থেকে! এমনই জল্পনা শুরু হয়েছে ঝাড়গ্রামের সংস্কৃতি-জগতে। কারণ, ইন্দ্রাণীকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সঙ্গে ‘জঙ্গলমহল ঝুমুর ও লোকশিল্পী সমন্বয় মঞ্চ’-এর টানাপড়েন শুরু হয়েছে। প্রশাসন চায়, ঝুমুর মেলায় অনুষ্ঠান করুন ইন্দ্রাণী। মঞ্চের দাবি ইন্দ্রাণীকে অনুষ্ঠান করতে দেওয়া যাবে না। ইন্দ্রাণী অবশ্য বলছেন, ‘‘এমন বিতর্ক খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমাকে বাদ দিয়েই তা হলে মেলা হোক।’’ সেইসঙ্গে ঝুমুরমেলায় নতুন প্রজন্মের ঝুমুর শিল্পীদের বেশি করে সুযোগ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন ইন্দ্রাণী।

Advertisement

আগামী শনি ও রবিবার ঝাড়গ্রাম শহরের রবীন্দ্রপার্কে ঝুমুর মেলা হওয়ার কথা। ইন্দ্রাণী যেহেতু সরকারি জঙ্গলমহল উৎসবে অনুষ্ঠান করেছেন, তাই তাঁকে এ বার সরকারি ঝুমুর মেলার শিল্পী তালিকায় রাখা যাবে না— এমনই দাবি তুলেছে মঞ্চ। দফায় দফায় প্রশাসনের সঙ্গে মঞ্চের প্রতিনিধিদের আলোচনার পরেও রফাসূত্র মেলেনি। মঞ্চের তরফে ৬০ জন শিল্পীর নামের তালিকা মহকুমাশাসকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তাতে ইন্দ্রাণী মাহাতো, সমীর মাহাতো ও মাধবী মাহাতোর নাম নেই। মঞ্চের সভাপতি ঝুমুরশিল্পী লক্ষ্মীকান্ত মাহাতো বলেন, ‘‘সরকারি জঙ্গলমহল উৎসবে ইন্দ্রাণী, সমীর ও মাধবী অনুষ্ঠান করেছেন। জঙ্গলমহল উৎসবে সুযোগ না-পাওয়া বঞ্চিত শিল্পীদের প্রতিবাদেই জেলা প্রশাসন ঝুমুর মেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই যাঁরা জঙ্গলমহল উৎসবে অনুষ্ঠান করেছেন, তাই তাঁদের বাদ দিয়ে বঞ্চিত শিল্পীদের অনুষ্ঠান করার সুযোগ দেওয়া হোক।’’

জঙ্গলমহল উৎসবে সুযোগ না পেয়ে উৎসব চলাকালীন গত ২৪ জানুয়ারি মঞ্চের উদ্যোগে ঝাড়গ্রাম শহরে বিক্ষোভ-মিছিল করেছিলেন লোকশিল্পীরা। পরে জেলাশাসকের দফতরের সামনে জমায়েত করে ধামসা-মাদল বাজিয়ে গান গেয়ে ঝুমুরশিল্পীরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এরপর জেলাশাসক ঝুমুর মেলা করার আশ্বাস দেন। কিন্তু পরিস্থিতিতে যা তাতে আগামী শনি-রবিবার ঝুমুর মেলা হবে কি-না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। প্রশাসন সূত্রের দাবি, ২০১৭ সেরা ঝুমুরশিল্পী হিসেবে রাজ্য সরকারের ‘সুধী প্রধান পুরস্কার’ পেয়েছেন ইন্দ্রাণী। আকাশবাণী ও দূরদর্শনের শিল্পী ইন্দ্রাণী জঙ্গলমহলের পাশাপাশি, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠান করেন। জনপ্রিয় শিল্পীকে সরকারি মেলায় বাদ দেওয়া যাবে না।

Advertisement

কুড়মি উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রথীন্দ্রনাথ মাহাতো বলেন, ‘‘ইন্দ্রাণীকে ঝুমুমেলায় সুযোগ দেওয়া যাবে না বলে একাংশ শিল্পী গোঁ-ধরে বসে রয়েছেন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘এ বার থেকে সব শিল্পীকে নিয়েই প্রতি বছর ঝুমুর মেলা হবে। ঝুমুর ও লোকশিল্পীদের সহযোগিতায় আমরা মেলাটি সর্বাঙ্গসুন্দর ও সফল করে তুলতে চাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement