এই ভাবেই বস্তা নিয়ে যাওয়া হয়।—নিজস্ব চিত্র
করোনা আতঙ্কে গেট বন্ধ করেছে আইআইটি কর্তৃপক্ষ। তাই মিড-ডে মিল বিলিতে বিপাকে পড়েছে আইআইটি চত্বরে থাকা স্কুল। মহকুমাশাসকের বারবার অনুরোধেও আইআইটির গেট খোলেনি। তাই বাধ্য হয়ে গেট টপকে মিড ডে মিলের চাল-আলুর বস্তা পার করলেন শিক্ষকরা। তারপরে আইআইটির বাইরে রাস্তার ধারে সেগুলি বিলি হল। ঘটনাটি খড়্গপুরের হিজলি জুনিয়র বেসিক স্কুলে। বৃহস্পতিবার থেকে সেখানে এই পর্বের চাল-আলু দেওয়া শুরু হয়েছে।
লকডাউন পর্বে যতবারই মিড ডে মিলের চাল-আলু দেওয়া হয়েছে ততবারই সমস্যায় পড়েছে এই স্কুল। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে খোদ খড়্গপুরের মহকুমাশাসক বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
ওই স্কুলের টিচার ইন-চার্জ প্রসেনজিত দের ক্ষোভ, “আইআইটি গেট খোলেনি। আমি অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানালে তিনিও এড়িয়ে গিয়েছেন। মহকুমাশাসক অনুরোধ করলেও আইআইটি শোনেনি। তাই বাধ্য হয়েই মিড-ডে মিলের চাল-আলু কাঁধে করে বয়েছি। করোনার সময় যখন একে-অপরের পাশে দাঁড়ানো উচি তখন আইআইটির মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমন অমানবিক চেহারা শিক্ষক সমাজের লজ্জা!”
লকডাউনের গোড়া থেকেই নিজেদের এলাকার মূল গেট বাদে সমস্ত গেট বন্ধ করেছে আইআইটি কর্তৃপক্ষ। বাইরের লোকের ঢোকা-বেরোনো বন্ধ হয়েছে। আইআইটি চত্বরে থাকা ওই স্কুল সংলগ্ন দুর্গামন্দিরের গেট বন্ধ থাকায় অভিভাবকেরা স্কুলে আসতে পারছেন না। তাই প্রতিবারই আইআইটির বাইরে রাস্তার ধারে মিড ডে মিলের চাল-আলু বিলি করা হচ্ছে। টিচার ইনচার্জ জানান, এর আগের পর্বগুলিতে মহকুমাশাসকের অনুরোধে গেট খোলায় তাঁরা বস্তাগুলি বের করতে পেরেছিলেন। এ বার সেটাও হয়নি।
অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শঙ্কর সিংহ বলেন, “আমি বিষয়টি দেখছি।” মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “মিড-ডে মিল বিলির খাতে বিদ্যালয়ের হাতে যে টাকা আছে তা খুবই কম। ওই টাকায় গাড়ি ভাড়া করে আইআইটির মূল গেট দিয়ে চাল-আলুর বস্তা বের করা খরচ সাপেক্ষ। তাই আমিও আইআইটির দুর্গামন্দিরের গেটটি খোলার জন্য রেজিস্ট্রারের কাছে বহু বার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু আইআইটি ওই গেট খোলেনি। পরের বার আমাকে অন্য পদক্ষেপ করতে হবে।”
সরব হয়েছেন অভিভাবকেরাও। তালবাগিচার বাসিন্দা মিন্টু দাসের ক্ষোভ, “এভাবে শিক্ষকদের বস্তা কাঁধে নিয়ে যেতে দেখে খুব খারাপ লাগছিল। আমরা সাহায্য করেছি। এমন ঘটনায় শিক্ষার্থীরা কী শিখবে!”
আইআইটির রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ বলেন, ‘‘গতবারের মতো এবারেও বিলি হবে বলে আগে থেকেই কথা হয়েছিল। কিন্তু গেট না খোলার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিচ্ছি।’’