প্রতীকী ছবি।
নাবালিকা ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তারপর সেই শিক্ষককে মারধর করলেন অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম শহরের নতুনডিহি এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিষেক সরকার নামে ওই শিক্ষককে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটির মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়েছে। নতুনডিহি এলাকায় নিজের বাড়ি লাগোয়া একটি কোচিং সেন্টার ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালান বছর বত্রিশের ওই যুবক। সেই কোচিং সেন্টারের এক নাবালিকা পড়ুয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার রাতেই অভিষেককে গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম মহিলা থানার পুলিশ। তবে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় রবিবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিষেকের কোচিং সেন্টারে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসে। সেখানে সিসিটিভিও রয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় এক ছাত্রীর বাড়ির লোকজন অভিষেকের বাড়িতে চড়াও হন। অভিষেক এক ছাত্রীকে পড়ানোর নামে কয়েকদিন ধরে যৌন নিগ্রহ করেছেন অভিযোগ তুলে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আরও কয়েকজন ছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকেরাও সেখানে হাজির হয়ে হইচই জুড়ে দেন। ওই নাবালিকা শহরের একটি স্কুলের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পক্সো আইনে মামলা রুজু করে অভিষেককে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ওই নাবালিকার গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করানো হবে। অভিযুক্ত সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই আদালতে তোলা হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিজনেরাও মারধর, কেচিং সেন্টার ও বাড়ি ভাঙচুরের পাল্টা অভিযোগ করেছেন। তাঁর বোনের অভিযোগের ভিত্তিতে হামলাকারীদের বিরুদ্ধেও মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অভিষেকদের পারিবারিক আইনজীবী তপন সিংহ বলেন, ‘‘চার বছর ধরে ওই ছাত্রীটি কোচিং সেন্টারে পড়ছে। শুক্রবারও পড়তে এসেছিল। শনিবার সন্ধ্যায় তার পরিজনেরা আচমকা অভিষেকের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে মারধর করেন। পরে ওই নাবালিকা পুলিশে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ করেছে। কয়েকদিন ধরেই যদি ওই ছাত্রী নির্যাতিতা হয়ে থাকে, তাহলে এতদিন পরে কেন অভিযোগ করা হচ্ছে?’’ ওই আইনজীবীর দাবি, এক সহপাঠী ছাত্রের সঙ্গে ওই নাবালিকার সম্পর্কে আপত্তি করেছিলেন অভিষেক। অভিভাবককে ডেকে সতর্কও করেছিলেন। নাবালিকার মা বলেন, ‘‘মেয়ের সঙ্গে একটি সহপাঠী ছেলের সম্পর্ক নিয়ে ব্ল্যাকমেল করে আমার মেয়েকে নিগ্রহ করতেন অভিষেক। মেয়ে এতদিন ভয়ে কিছু বলেনি। তার এক বান্ধবীকে জানিয়েছিল। তার থেকে বিষয়টি জানতে পারি। তারপরই শনিবার সন্ধ্যায় কোচিং সেন্টারে যাই। কোনও সদুত্তর না পাওয়ায় তকাতর্কি হয়। সিসিটিভির ফুটেজ দেখতে চাই। সেখানে দেখা যায় অভিষেক আমার মেয়েকে নিগ্রহ করছেন।’’ একইসঙ্গে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর দাবি, স্থানীয়রাই উত্তেজিত হয়ে চড়াও হয়েছিলেন।