প্রতীকী ছবি।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে চণ্ডীয়া নদীর বাঁধ সংস্কারে শ্রমিকের কাজ করেছিলেন। প্রায় এক বছর আগে ওই কাজে যোগ দেওয়া অন্য শ্রমিকেরা মজুরি পেলেও এতদিনেও পারিশ্রমিক পাননি বলে অভিযোগ করলেন এক শ্রমিক। ময়না ব্লকের পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা নিশিকান্ত দাস অধিকারী নামে ওই ব্যক্তি এই নিয়ে বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন।
নিশিকান্তর অভিযোগ, ওই প্রকল্পে গত বছর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ৩৫ দিন কাজ করেছিলেন। কিন্তু সেই কাজে তাঁর সঙ্গের অন্য শ্রমিকেরা ইতিমধ্যেই নিজেদের প্রাপ্য মজুরি পেয়ে গিয়েছেন। অথচ, বছর ঘুরতে চললেও তিনি নিজের প্রাপ্য মজুরি পাননি। বুধবার বিডিওর তাঁর হকের টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিডিও।
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ময়নার বলাইপন্ডা এলাকার পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা নিশিকান্তর একশো দিনের কাজের প্রকল্পে জবকার্ড রয়েছে। ২০১৮-’১৯ আর্থিক বছরে ওই প্রকল্পে পরমানন্দপুর এলাকায় চণ্ডীয়া নদী বাঁধ ও স্থানীয় ভুতাখাল সংস্কারের কাজ হয়েছিল। সেই কাজে এলাকার ৬০ জন শ্রমিকের মধ্যে ছিলেন নিশিকান্ত। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কাজের জন্য কিছুদিন পরে অন্য শ্রমিকরা টাকা পেলেও আমি মজুরির টাকা পাইনি। পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে জানালেও কোনও সুরাহা হয়নি।’’ কেন তিনি তাঁর বকেয়া মজুরি পাননি তার জন্য বিডিওর কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন নিশিকান্ত।
ময়না ব্লকের বিজেপি নেতা সন্দীপ সামন্তের অভিযোগ, ‘‘ওই ব্যক্তি দিনমজুরি সংসার চালান। তাই একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজের পরেই তাঁর দ্রুত পারিশ্রমিক পাওয়া দরকার ছিল। কিন্তু প্রায় এক বছর হতে চললেও টাকা পাননি তিনি। পঞ্চায়েত-প্রশাসনের গাফিলিততেই এটা ঘটেছে। আমরা চাই উপযুক্ত তদন্ত করে দ্রুত ওই শ্রমিকের প্রাপ্য মেটানোর ব্যবস্থা করা হোক।’’
পঞ্চায়েত ও প্রশাসন সূত্রে খবর, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে অদক্ষ শ্রমিক প্রতিদিন ১৯১ টাকা ও দক্ষ শ্রমিক প্রতিদিন ৩৮২ টাকা করে পারিশ্রমিক পান। কাজের কিছুদিন পরেই শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি তাঁর প্রাপ্য মজুরির টাকা চলে যায়। সেই হিসাবে ৩৫ দিন কাজ করার হিসাবে নিশিকান্তর পাওনা প্রায় সাত হাজার টাকা। কাজ করেও টাকা না পাওয়ার অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্ব। তৃণমূল পরিচালিত পরমানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মৃণাল সামন্তর অবশ্য দাবি, ‘‘একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ করার পরেও ওই শ্রমিক টাকা পাননি, এমন অভিযোগ আমার কাছে অভিযোগ আসেনি। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বিডিও রাজীব সর্দার বলেন, ‘‘পরমানন্দপুর এলাকায় একশো দিনের কাক করার পরেও পারিশ্রমিক পাননি বলে একজনের অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’