জবরদখল: তমলুকের প্রধান সড়কের পাশে এই দোকানের সারি খুব চেনা ছবি। নিজস্ব চিত্র
জবরদখলকারীদের দাপটে উধাও ফুটপাথ। বছর ১৫ আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সদর শহরের মর্যাদা পেলেও এখনও অবরুদ্ধ তমলুকের রাস্তা। ফুটপাথে জায়গা হয় না, তাই রাস্তা দিয়েই চলতে হয় পথচারীদের। এ বার শহরের প্রধান রাজ্য সড়কের দু’পাশে ফুটপাথ-সহ সৌন্দর্যায়নের জন্য পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সৌন্দর্যায়নের প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। রাস্তার দু’পাশে গজিয়ে ওঠা দোকানের ব্যবসায়ীদের সরিয়ে অন্যত্র পুনর্বাসনের পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘তমলুক শহরের মানিকতলা মোড় থেকে নিমতলা মোড় পর্যন্ত প্রধান রাজ্য সড়কের দু’পাশে পথচারীদের জন্য ফুটপাথ তৈরি-সহ সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ চলছে। রাস্তার ধারে সরকারি জায়গায় থাকা দোকানদারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
জেলা প্রশাসন ও পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা ভাগ করে ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা গঠন করা হয়। প্রশাসনিকভাবে জেলা সদর হিসেবে স্বীকৃতি পায় তমলুক। তবে জেলার প্রশাসনিক অফিস তৈরি না হওয়ায় অতিরিক্ত জেলাশাসকের অফিস ভবনে জেলাশাসকের অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে তমলুকের নিমতৌড়িতে নতুন জেলা প্রশাসনিক অফিসের বহুতল ভবন নির্মাণ চলছে। জেলা পুলিশ সুপারের অফিসও সেখানে গড়া হবে। একইসঙ্গে তমলুক শহরের রাস্তার হাল বদলাতে উদ্যোগী হয় জেলা প্রশাসন।
শহরের মানিকতলা থেকে জেলখানা মোড়, পুরসভার অফিস, স্টিমারঘাট, বড়বাজার হয়ে নিমতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট করার কাজ করছে পূর্ত দফতর। জেলা পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার অজয়কুমার সঞ্জয় বলেন, ‘‘তমলুক-পাঁশকুড়া সড়কে শহরের ওই রাস্তার পাশাপাশি মেচেদা-হলদিয়া রাজ্য সড়কে মেচেদা থেকে নিমতলা পর্যন্ত সড়ক পাকাপোক্ত করার জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে হলদিয়া থেকে মেচেদাগামী রাস্তায় শহরের মানিকতলা থেকে নিমতলা মোড় পর্যন্ত অংশে ফুটপাথ তৈরির জন্য পরিকল্পনা রয়েছে।’’
প্রশাসন ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়া–মেচেদা রাজ্য সড়কে মানিকতলা থেকে হাসপাতাল মোড় হয়ে নিমতলা মোড় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তার দু’ধারে পূর্ত দফতরের জায়গা বেদখল করে দীর্ঘদিন ধরে কয়েকশো দোকানপাট রয়েছে। শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমন্বয় সমিতির সভাপতি শ্যামপদ মাজি বলেন, ‘‘শহরের উন্নয়নের স্বার্থে আমরা রাস্তার ধার থেকে সরে যাওয়ার পক্ষেই রয়েছি। তবে সকলের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রাস্তার পাশে কতকগুলি অব্যবহৃত সরকারি জায়গা রয়েছে। সেখানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হতে পারে বলে প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’