শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
বাম জমানার ‘অপারেশন সূর্যোদয়ের’ সেই ১০ নভেম্বরের ঘটনায় ‘শহিদ দিবস’ পালনকে কেন্দ্র করে এ বছর নন্দীগ্রামে উত্তেজনার পারদ চড়ছিল। অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের মধ্যস্থতায় তার মীমাংসা হল। ঠিক হল, করপল্লির শহিদ বেদিতে কারা আগে সভা করবে? শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি? না রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল?
নন্দীগ্রামে রাজনৈতিক জমি ফিরে পাওয়ার আশায় ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর ‘সূর্যোদয়’ অভিযানের ডাক দিয়েছিল রাজ্যের তৎকালীন শাসক দল সিপিএম। সে দিনের রক্তাক্ত অভিযানে প্রাণ গিয়েছিল জমি আন্দোলনের একঝাঁক নেতা-কর্মীর। এখনও নিখোঁজ বেশ কয়েক জন। তার পর থেকে প্রতি বছর এই দিনটিতে নন্দীগ্রামের করপল্লিতে ‘শহিদ স্মরণ’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কিন্তু ২০২০ সালে শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই করপল্লিতে কর্মসূচির আয়োজন করা নিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়ে নন্দীগ্রামে। গত বছরের এ বার দ্বন্দ্বে জড়ায় তৃণমূল ও বিজেপি। উত্তাপ আঁচ করে যুযুধান দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠকে বসে পুলিশ প্রশাসন।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৈঠকে প্রথমে সভা করার অনুমতি চায় বিজেপি। সেই মতো শুক্রবার সকাল ৮টায় করপল্লির শহিদ বেদিতে স্মরণসভার আয়োজন করবে তারা। এর পর ৯টা নাগাদ সভায় যোগ দেওয়ার কথা শুভেন্দুর। বিজেপির অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার কথা সকাল সাড়ে ৯টায়। নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘এর আগে প্রতিবার তৃণমূল প্রথমে শহীদ স্মরণ করে। এ বার আমাদের দাবি ছিল, আমরাই প্রথমে অনুষ্ঠান করব। গত ৭ নভেম্বর প্রশাসনিক বৈঠকে আমরা সেই দাবি জানাই। এর পর দু’পক্ষের সম্মতিতে আমরা সকালে প্রথমে অনুষ্ঠান আয়োজন করছি। এখানে শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এবং জমি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত থাকবেন।’’
অন্য দিকে, তৃণমূলের তরফে বেলা ১০টা থেকে করপল্লিতে কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। যেখানে তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ, সাংসদ দোলা সেন, মন্ত্রী পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় এবং জেলার দুই মন্ত্রী অখিল গিরি, বিপ্লব রায়চৌধুরী, প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র-সহ নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে। নন্দীগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, ‘‘সকালে করপল্লির অনুষ্ঠানের পর বিকেল ৩টেয় হাজরাকাটায় সভা রয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বদের পাশাপাশি নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের সমস্ত নেতারাই এই অনুষ্ঠানে শামিল হচ্ছেন।’’