তমলুকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে পদযাত্রায় সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছদ্মবেশী নির্দলদের সামনে রেখে সিপিএম লড়াই করছে বলে অভিযোগ তুললেন তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার তমলুক পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ সেনের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারে তমলুকে ষোলফুকারের গেট থেকে স্টিমারঘাট পর্যন্ত পদযাত্রা করেন তিনি। সভায় শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘এখানে ছদ্মবেশী নির্দল প্রার্থী রয়েছেন। পিছনে অত্যাচারী সিপিএমের সমর্থন আছে। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামে অত্যাচার করা সিপিএম নিজের প্রতীকে এখানে লড়াই করার সাহস দেখাতে পারেনি। তাঁরা ছদ্মবেশী নির্দলকে সামনে রেখে তৃণমূল প্রার্থীদের হারাতে চায়।’’ এ দিন সকালে তমলুক পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী চঞ্চল খাঁড়ার সমর্থনে এলাকায় পদযাত্রা করেন রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। পরে বিকেলে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে তমলুক শহরের মানিকতলা থেকে হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করেন সৌমেনবাবু ও জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি আনিসুর রহমান প্রমুখ।
এ দিন তমলুকে বাম প্রার্থীদের সমর্থনে জনসভা করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব। ক্ষমতায় আসার তিন বছরের মধ্যে দ্রুত জনসমর্থন হারিয়ে তৃণমূল সন্ত্রাসের পথে নির্বাচনে জয়লাভের রাস্তা বেছে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। কলকাতা পুরভোটে হওয়া সন্ত্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘‘২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল যত শতাংশ ভোট পেয়েছিল এই তিন বছরে এখন রাজ্যে গড়ে তাঁর চেয়ে ১০ শতাংশ ভোট কমেছে। পৌরসভাগুলিতে মানুষের সমর্থন হ্রাস পেয়েছে। কোনও কোনও জায়গায় ২০-২২ শতাংশ জনসমর্থন কমেছে। আর তার ফলেই তৃণমূল সাধারণ মানুষকে তাঁর ভোটধিকার প্রয়োগ করতে দিতে রাজি নয়। যার নজির কলকাতা পুরসভার ভোটে।’’
রবীনবাবু আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, ২৫ এপ্রিল রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলিতে ভোট গ্রহণের দিনও তৃণমূল সন্ত্রাস চালাতে পারে। তিনি ২৩ এপ্রিল ভোট প্রচারের শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নেবেন বলে আশ্বাস দেন। ওইদিন দলের রাজ্য কমিটির বৈঠক আছে। সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
চন্দ্রকোনায় সিপিএম প্রার্থীদের সমর্থনে মিছিল। — নিজস্ব চিত্র।
এ দিকে সন্ধ্যায় সন্ধ্যায় কাঁথির ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কাঁথি পুরসভায় তৃণমূল কংগ্রেস ফের ক্ষমতায় আসছেই। ইতিমধ্যেই দুটি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল জিতেছে, কিন্তু আমাদের লক্ষ্য ২১-০ আসনে পুরসভা দখল করা।’’ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় শুভেন্দুবাবু কাঁথির বিভিন্ন ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে মোট চারটি নিবার্চনী সভা করেন। প্রতিটি সভাতেই বিরোধী পক্ষকে আক্রমন করে বলেন কাঁথিতে বিরোধীরা শুধু অস্তিত্বহীন নয়, দিশাহীনও। এ দিনের সভাগুলিতে শুভেন্দুবাবু ছাড়াও কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী, জেলা সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল, বিধায়ক দিব্যেন্দু অধিকারী, বনশ্রী মাইতি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অন্যদিকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কাঁথি পুরসভায় কংগ্রেস প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মায়া ঘোষ, প্রাক্তন বিধায়ক শৈলজা দাস, ক্ষিতীন্দ্র মোহন সাহু, পার্থ বটব্যাল, এরশাদ আলি, দেবাশিস পাহাড়ি ও শহর কংগ্রেস সভাপতি বিশ্বনাথ তেওয়ারী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বামফ্রন্ট ও বিজেপির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার কাঁথি শহরে কোন নিবার্চনী সভা না হলেও দুই দলের প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার চালান। অন্যদিকে কাঁথির বর্ষীয়ান সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিশির অধিকারী মঙ্গলবার বিকেলে রিকশায় চড়ে ১৫নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা প্রার্থী কমলা বেরার হয়ে নিজস্ব কায়দায় ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালান।