নিহতের বাড়িতে শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর নন্দীগ্রামের পুজো উদ্বোধনে গিয়ে জানিয়েছিলেন, কোলাঘাটের নিহত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর পাশে তিনি রয়েছেন। নিহতের পরিবারের সিবিআই তদন্তের আর্জিতেও সমর্থন জানিয়েছিলেন। এর এক দিন পর বুধবার নিহতের বাড়িতে হাজির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরিবারকে সমস্ত আইনি সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি, নিহতের স্ত্রীকে চাকরি এবং ছেলেমেয়ের পড়াশোনার জন্য অর্থ ফিক্সড ডিপোজিট করে দেওয়ার তিনি প্রস্তুতি দেন।
এদিকে, নিহতের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবি করলেও ওই খুনের ঘটনায় পুলিশ ভরসা করছে রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি’তে। ২০ নভেম্বর রাতে কোলাঘাটের দেউলবাড়ে যে এলাকায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমীর পড়িয়া, এ দিন সিআইডি’র একটি সেখানে যায়। তারা এলাকা খতিয়ে দেখে।
সমীরকে খুনের ঘটনায় এদিন জিঞাদা বাজার বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানান ব্যবসায়ীরা। আর সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে যান বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতার সামনে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান নিহতের বাবা। শুভেন্দু সমস্ত আইনি সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।কোলাঘাট এলাকায় দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে এবং ব্যবসায়ী খুনের প্রতিবাদে শুভেন্দু এলাকার থানার বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘পুলিশ সারারাত জেগে থাকে টাকা তোলার জন্য। আগে দু'বার সমীরের দোকানে ডাকাতি হয়েছে।যারা ডাকাতি করেছিল, তারাই ওঁকে খুন করেছে। পুলিশ আগের দু'টি ঘটনায় ব্যবস্থা নিলে সমীরকে খুন হতে হত না। আমি পরিবারের পাশে রয়েছি।’’
সমীরের বাড়ির এলাকার বিধায়ক রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী। ব্যবসায়ী খুনের ৪৮ ঘণ্টা পরও তিনি পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না আসায় কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। এ দিন শুভেন্দুর আশ্বাস, ‘‘সমস্ত রকমের আইনি সহায়তা আমি ওঁদের দেব। আগামী এপ্রিল মাসে সমীরের স্ত্রীকে গ্রুপ ডি'র চাকরির ব্যবস্থা করে দেব। দু'টি ছেলেমেয়ের পড়াশোনার জন্য পোস্ট অফিসে ফিক্সড ডিপোজিটের ব্যবস্থা করে দেব।’’ এর পাশাপাশি, জিঞাদা বাজারে সিসিটিভি এবং পথবাতি বসিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন শুভেন্দু।
২০ নভেম্বরের পর দিনই নিহত ব্যবসায়ীর স্ত্রী কোলাঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ঘটনার দু'দিন পরও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা-সহ চার দফা দাবিতে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং তমলুকের এসডিওকে এ দিন স্মারকলিপি দেন নিহত ব্যবসায়ীর এলাকাবাসী। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সমীরের বাবা সুকুমার পড়িয়াও। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ এখনও কাউকে ধরতে পারল না। পুলিশসুপারকে আবেদন জানিয়েছি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। উনি চেষ্টা করছেন বলে জানান। তবে আমি এখনও বলছি এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চাই।’’
যদিও পুলিশ সূত্রের খবর, তারা ইতিমধ্যেই তদন্তের জন্য সিআইডির সহযোগিতা নিয়েছে। এ দিন ঘটনাস্থলে যায় সিআইডি’র তিন সদস্য। তাঁদের সঙ্গে নিহতের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট-সহ অন্য তথ্য ভাগ করে নেওয়া হবে বলে জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। তমলুকের এসডিপিও সাকিব আহমেদ বলেন, ‘‘দ্রুত ওই ঘটনার কিনারা করতে সিআইডি’র সাহায্য নেওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত কিনারা করা যাবে।’’