নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায়। রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে চালু করেছে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ কর্মসূচি। শুক্রবার থেকে এই কর্মসূচির মাধ্যমে ত্রাণের আবেদন শুরু করেছেন নন্দীগ্রামের বাসিন্দারা। পাল্টা আজ থেকে নন্দীগ্রামে শুরু হয়ে গেল শুভেন্দু অধিকারীর প্রকল্প ‘সেবা সপ্তাহ’। যেখানে প্রতিটি বুথে বুথে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ত্রাণ, খাদ্যসামগ্রী, পোশাক তুলে দেবেন বিজেপি নেতৃত্ব। আগামী এক সপ্তাহ এই বিধানসভার ২৭৮টি বুথেই এই কর্মসূচি চলবে বলে বিজেপি নেতৃত্বরা জানিয়েছেন।
রাজ্যের নির্বাচনী ইতিহাসে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রটি একটি মাইলস্টোন হয়ে গিয়েছে। এই কেন্দ্রের দুই মূল প্রতিদ্বন্দ্বীর একজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, অন্যজন বিরোধী দলনেতা। স্বাভাবিক ভাবেই এই বিধানসভা কেন্দ্রটি প্রতি মুহূর্তেই নজর কেড়ে নিচ্ছে রাজ্যবাসীর। গত সপ্তাহে ইয়াসের কারণে নদী তীরবর্তী নন্দীগ্রামের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, ‘‘এই কেন্দ্রে তৃণমূলের হার হয়েছে বলেই ইয়াস ও বন্যা পরিস্থিতিতে এখানকার মানুষদের পর্যাপ্ত সাহায্য করা হয়নি। তাই বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামের জন্য সেবা সপ্তাহের ঘোষণা করেছেন।” বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি প্রলয় পালের দাবি, “ইয়াসের কারণে নন্দীগ্রামে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ত্রাণের হাহাকার চলছে সর্বত্র। শাসকদল থেকে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই শুভেন্দুবাবু বিরোধী দলনেতা হিসেবে ওনার সেবা সপ্তাহ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।”
প্রলয় জানান, শুক্রবার থেকে এক সপ্তাহ চলবে এই কর্মসূচি। নন্দীগ্রাম ১ ও ২ নম্বর ব্লকের ২৭৮টি বুথের প্রতিটিতে কমপক্ষে ২০টি পরিবারকে ত্রিপল, ৪০টি পরিবারকে শুকনো খাবার, ৪০টি পরিবারকে পোশাক বিতরণ করা হবে। প্রথম দিনেই ২১৫টি বুথের প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে সেবাদান করা হয়েছে। আগামী দিনেও এমনটা চলতে থাকবে।
তবে বিজেপির এই কর্মসূচিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতৃত্ব। নন্দীগ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি স্বদেশ দাস বলেন, “ইয়াসের সময় এবং বন্যার সময় কোথায় ছিলেন শুভেন্দু। গ্রামের পর গ্রাম যখন ভেসে যায়, তখন পুলিশ ও প্রশাসন রাতভর উদ্ধারকার্য চালিয়ে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনে। তাঁদের মুখে আহার তুলে দিয়েছিল।” স্বদেশের কটাক্ষ, “আজ থেকে নন্দীগ্রামে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ কর্মসূচিতে ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন জমা করছেন। তবে শুভেন্দুবাবু কোথায় ত্রাণ দিচ্ছেন তা তিনি ও তাঁর দলের লোকেরাই জানেন।”