চাকরি আছে কি নেই জানেনই না শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষা! নিজস্ব চিত্র।
নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগে রাজ্যের ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। চাকরি হারানো সেই প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে তীব্র চাপানউতর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এমন চাকরি হারানো শিক্ষকের সংখ্যা ৩০। ওই তালিকার ২০ নম্বরে জ্বলজ্বল করছে তৃণমূল পরিচালিত নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষা সঞ্চিতা প্রধানের নাম। এই খবর ছড়াতেই শোরগোল শুরু হয়েছে এলাকায়। বিষয়টি নিয়ে শাসক দলকে বিঁধতে ছাড়েননি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ‘টাকা দিয়ে’ চাকরি পেয়েছেন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষা।
নন্দীগ্রাম থানার উত্তর বয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন সঞ্চিতা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি হাবিবুর রহমানের দাবি, “হাই কোর্ট ও স্টেট বোর্ডের নির্দেশে এই জেলার ৩০ জনের নাম রয়েছে। তাঁদের দ্রুত বরখাস্ত করার পাশাপাশি বেতন বন্ধের নির্দেশ কার্যকর করা হচ্ছে।” তবে সরকারি ভাবে এই নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি বলেও জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি।
এর মধ্যে শুক্রবার নন্দীগ্রাম সফরে এসে বিধায়ক শুভেন্দুর কটাক্ষ, “উনি (সঞ্চিতা) টেট পাশ করেননি। পরীক্ষাও দেননি। তার পরেও প্রাথমিক শিক্ষকতার চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এ জন্য উনি মহাদেবের (নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি মহাদেব বাগ) মাধ্যমে পার্থ (প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়)-কে টাকা দিয়েছেন। ১০-১২ লাখ টাকা তো দিয়েছেনই।” শুভেন্দুর আরও সংযোজন, “এ রকম হাজার হাজার ঘটনা আছে। সবার চাকরি যাবে। হরি বোল।”
তবে এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন সঞ্চিতা। তিনি বলেন, “আমি সমস্ত নিয়ম মেনে চাকরি পেয়েছি। তবে চাকরি খোয়া যাওয়ার বিষয়ে কিছুই জানি না। এখনও এই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ আমার কাছে আসেনি।” অন্য দিকে, শুভেন্দু তাঁর নাম নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতা মহাদেব বাগের প্রতিক্রিয়া, “আমাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ফাঁসানো হচ্ছে। কারও চাকরির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।