আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ‘দাদা’র
Suvendu Adhikari

নন্দীগ্রামের হামলায় গ্রেফতার ২

এ দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জমিরক্ষা আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে সতর্ক করেন শুভেন্দু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৩৬
Share:

নন্দীগ্রামের আহতদের দেখতে তমলুক হাসপাতালে শুভেন্দু।নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে এক ধর্মীয় আসার পথে উসমানচকের কাছে বাসযাত্রীদের উপরে হামলার ঘটনায় অশান্তি তৈরি হয়। তাতেই শতাধিক মানুষ আহত হন বলে বিজেপির দাবি। আহতদের উদ্ধার করে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।আক্রমণের ঘটনায় জড়িতদের ‘জেহাদি’ বলে উল্লেখ করে অবিলম্বে তাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। বুধবার হামলায় আহতদের দেখতে নন্দীগ্রামে এসে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্য জমি রক্ষা আন্দোলনের ধাঁচে ফের লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু।

Advertisement

এ দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জমিরক্ষা আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে সতর্ক করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘২০০৭ সাল থেকে নন্দীগ্রামের মানুষকে অনেক ক্ষতি স্বীকার করতে হয়েছে। প্রত্যেক মানুষের যে কোনও রাজনৈতিক দল করার ও ধর্ম পালনের অধিকার আছে। পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে দেখে কেউ যদি মনে করে, গুন্ডামি, মারপিট করবে তাতে বিগত দিনে দেখা গিয়েছে সে সব দীর্ঘস্থায়ী হয় না।’’ হুঁশিয়ারির সুরে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমরা গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ করব। নন্দীগ্রাম ভারতবর্ষের বাইরে নয়। বাংলার বাইরে নয় । যারা বাধা দেবে, বিগত দিনে জমিরক্ষার আন্দোলনে যে ভাবে লড়েছি ভবিষ্যতেও মানুষের অধিকার রক্ষার লড়াইতে একইভাবে যুবক-যুবতীদের নিয়ে লড়ব।’’পুলিশের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ আগে দলদাস ছিল। এখন ক্রীতদাস।’’

যদিও হামলার ঘটনায় জড়িত অভি‌যোগে পুলিশ ইতিমধ্যেই শেখ সেলিম এবং শেখ রহিমুল শাহ নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে। শেখ সেলিমের বাড়ি ৭ নম্বর জলপাই গ্রামে। শেখ রহিমুল উসমানচকের বাসিন্দা। দু’জনের বিরুদ্ধে মারধর, গাড়ি ভাঙচুর, শ্লীলতাহানি এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। এ দিন ধৃতদের হলদিয়া আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

Advertisement

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, ‘‘মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে ‘গণহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে তৃণমূল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সামাজিক অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের উপরে আক্রমণ থেকেই বোঝা যাচ্ছে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কোথায় পৌঁছেছে। এর ফলে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। যার দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘হিংসার মাধ্যমে এই সরকার টিকে থাকার চেষ্টা করছে। পশ্চিমবাংলার মানুষ এটা বেশি দিন সহ্য করবে না। মানুষ ওদের থেকে সরে যাচ্ছে। পার্টির লোকেরা সরে যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। তাই হতাশা থেকেই আক্রমণ করা হচ্ছে।’’

পাল্টা তৃণমূলের দাবি, রাজনীতির ময়দানে জেতার জন্য ধর্মকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ রঞ্জন দাস বলেন, ‘‘প্রথম দিন থেকেই ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলেছেন। ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল জড়িত নয়। বরং এটা পরিষ্কার যে, এর পিছনে শুভেন্দুবাবুর হাত রয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিজেপিতে যোগদানের পর নন্দীগ্রামে প্রথম দিন এসেই ধর্মের রাজনীতি শুরু করে দিয়েছেন শুভেন্দু। মঙ্গলবারের ঘটনা তাঁর চক্রান্ত। শান্ত নন্দীগ্রামকে তিনি অশান্ত করতে চাইছেন ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে। আমরা তা হতে দেব না।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘এর আগে নন্দীগ্রামে অনেক ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়েছে।কোনওদিন গণ্ডগোল হয়নি।এর থেকে বোঝা যাচ্ছে মঙ্গলবারের হামলার পিছনে কার ইন্ধন ছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement