ফাইল চিত্র।
শহিদ স্মরণে হাজির যুযুধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে। ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে সকালে এলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। বিকেলে জমি আন্দোলনের আঁতুড়ে হাজির প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। তবে শুধু শুভেন্দুর কর্মসূচিতেই দেখা গেল নিহত নিশিকান্ত মণ্ডলের ছেলেকে।
২০০৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আততায়ীর গুলিতে খুন হন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নেতা নিশিকান্ত মণ্ডল। ভূমি উচ্ছেদ কমিটির ব্যানারেই দিনটি পৃথক পৃথক ভাবে স্মরণ করেছে তৃনমূল ও বিজেপি। সকালে সোনাচূড়া বাজার সংলগ্ন প্রয়াত নেতার পূর্ণাবয়ব মূর্তির কাছেই স্মরণ অনুষ্ঠান করে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কমিটি। সেখানে শুভেন্দু বলেন, ‘‘২০০৬ সালে ৩ নভেম্বর সোনাচূড়া হাই স্কুল মাঠে কৃষিজীবী রক্ষা কমিটির সভায় আমি ছিলাম। ২০০৭ সালে ৪ জানুয়ারি ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি তৈরি হয়। ২০০৭ সালে আন্দোলনের পরে নিশিকান্তকে গ্রেফতার করার চক্রান্ত করে তৎকালীন বাম সরকার। ২০০৮ সালে ১৪ মার্চ আমি কর্মসূচি পালন করতে এসে নিজের গাড়িতে নিশিকান্তকে সঙ্গে করে নিয়ে কাঁথির বাসভবনে নিয়ে চলে গেছিলাম। প্রস্তাবক মারফত পঞ্চায়েতে তাঁর মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। নিশিকান্ত নিজে ভোট না দিয়েও ভোটে জিতে ছিলেন এবং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হয়েছিলেন।’’
এ দিন শুভেন্দুর সভায় ছিলেন নিশিকান্তেলের বড় ছেলে সত্যজিৎ। তিনি বলেন, ‘‘বাবাকে নিয়ে এই রাজনৈতক দলাদলি কেন? বছরখানেক আগে বাবার নামে একটি কমিটি তৈরি করেছিলাম আমি। উদ্দেশ্য ছিল বাবাকে স্মরণ করা হবে ঐক্যবদ্ধ ভাবে। কিন্তু তৃণমূলের নেতারা তাতে সাড়া না দিয়ে পৃথক ভাবে অনুষ্ঠান করেই যাচ্ছেন।’’ এদিন তৃণমূলের আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি মণ্ডল পরিবারের সদস্যদের। এ ব্যাপারে সত্যজিৎ বলছেন, ‘‘তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে ওদের প্রতিহিংসার শিকার হয়েছি। আমার ফিশারি নষ্ট করে দেওয়া হয়। ২০২১ সালে আমি বিজেপিতে যোগ দেই। শুভেন্দু অধিকারী আমাদের পরিবারের পাশে শুরু থেকেই রয়েছেন।’’ এ ব্যাপারে তৃণমূলের নন্দীগ্রাম-১ ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, ‘‘স্থানীয় স্তরে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির তরফে সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। নিশিকান্ত মণ্ডলের ভাই এসেছিলেন।’’
তৃণমূলের সভায় সৌমেন থাকলেও ছিলেন না একদা ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির শীর্ষ নেতা শেখ সুফিয়ান বা নন্দীগ্রামে তাঁর অনুগামী প্রাক্তন ব্লক সভাপতি স্বদেশ দাস। তৃণমূল নেতৃত্বাধীন ওই সভার রাশ ছিল নন্দীগ্রামে সুফিয়ানের বিরোধী গোষ্ঠী বলে পরিচিত তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির চেয়ারম্যান পীযূষ ভুঁইয়া এবং তাঁর অনুগামী নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সদ্য দায়িত্ব নেওয়া সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ। এ ব্যাপারে বাপ্পাদিত্য বলছেন, ‘‘শেখ সুফিয়ান এবং স্বদেশ দাস আসেননি। তাঁদের হয়তো কোনও কাজ পড়ে গিয়েছে। আমি সবার সঙ্গে নিজে ফোনে কথা বলেছি। আমাদের আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’’