বক্তা: মেদিনীপুরে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
সামনেই দলের সম্মেলন শুরু হবে। সম্মেলন হবে একেবারে দলের নিচুতলা থেকে। তার আগে ‘বেনোজল’ নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে গেলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। সূর্যকান্তবাবুর স্পষ্ট বার্তা, যাঁরা দলের ন্যূনতম কাজগুলো করতে পারবেন না, তাঁদের দলে রাখার প্রয়োজন নেই। রবিবার মেদিনীপুরে দলের এক সভায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, “সুকুমারদা (সুকুমার সেনগুপ্ত) বলতেন, পার্টির চারটি পায়া। মিটিং, গণ-সংগঠন, লেভি, কাগজ (পত্রপত্রিকা)। পরে সংগ্রামটা যুক্ত হয়েছে। এই পাঁচটা কাজ করবেন না এমন একজনও যেন আমাদের পার্টিতে না থাকেন।”
সূর্যকান্তবাবুর কথায়, “যদি দেখছেন কেউ এই কাজগুলো করছেন না, তাঁকে করানোর দায়িত্ব আপনার। যে লেভিটা নিয়মিত দেয় না, যে গণ- সংগঠনে থাকে না, যে কাগজটা (পার্টির পত্রপত্রিকা) পড়ে না অথচ আর পাঁচটা কাগজ পড়তে পারে, আমাদের কোনও দরকার নেই এমন পার্টি সদস্য।” এরপরই অবশ্য সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের সংযোজন, “এর মানে এই নয় যে পার্টিটাকে কুঁকড়ে ছোট করে দেবেন। পার্টিকে প্রসারিত করতে হবে। বেকার যুবকদে, ছাত্রদের, শ্রমজীবী মানুষকে সংগঠিত করতে হবে।”
সুকুমার সেনগুপ্ত স্মারক বক্তৃতায় যোগ দিতে এ দিন মেদিনীপুরে এসেছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। শহরের স্পোটর্স কমপ্লেক্সে এই বক্তৃতা সভার আয়োজন করা হয়। ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মদন ঘোষ, দীপক সরকার, দলের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় প্রমুখ। সিপিএম যে শৃঙ্খলাপরায়ণ দল, কখনও নীতি এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের প্রবণতাকে প্রশ্রয় দেয় না, এ দিনের সভায় সেই বার্তাও দিয়েছেন সূর্যকান্তবাবু।
নিজের দীর্ঘ বক্তৃতার উদাহরণ টেনেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, “কোনও পার্টি আছে পশ্চিমবাংলায় যে আমার মতো এতক্ষণ বলবে, আর আপনাদের মতো এতক্ষণ শুনবে? যদি এটা তৃণমূল বা বিজেপি হত তাহলে হয়তো এতক্ষণে বক্তাকে কলার ধরে টেনে মারামারি শুরু করে দিত। মঞ্চে কে উঠবে, কে নামবে, তা ঠিক করে উঠতে পারত না।” তিনি বলেন, “আত্মসন্তুষ্টির কোনও কারণ নেই। মনে রাখবেন, আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। গণতন্ত্র থাকবে কি থাকবে না, এটা একটা চ্যালেঞ্জ। এই বিপদ মোকাবিলা করতেই হবে। আমাদের প্রতিরোধের জন্য তৈরি হতে হবে।”