সুরেন্দ্র যাদব (সাইকেলে)। রবিবার এগরায়। নিজস্ব চিত্র
মানুষের চেয়ে মাটির স্বাস্থ্য নিয়েই তিনি চিন্তিত বেশি। কারণ, মাটি ও মানুষের সম্পর্ক যে অবিচ্ছেদ্য। মাটির স্বাস্থ্য ঠিক থাকলে তার প্রভাবে মানুষের স্বাস্থ্যও ঠিক থাকবে। আর সেই বার্তা জনে জনে পৌঁছে দিতেই ‘সেভ সয়েল’ কর্মসূচি নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন গোটা ভারত। সেই যাত্রাতেই কাশ্মীর থেকে সাইকেল চালিয়ে এখন পূর্ব মেদিনীপুরে সুরেন যাদব। টানা দশ মাস সাইকেলে চালিয়ে তিনি আঠারোটি রাজ্যের মানুষকে মাটির সুরক্ষায় সচেতনার বার্তা দিয়েছেন। রবিবার সেই লক্ষ্যেই এগরা থেকে পরবর্তী গন্তব্য ঝাড়খন্ডে রওনা দিলেন মধ্যপ্রদেশের যুবক সুরেন্দ্র যাদব।
অত্যাধিক রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহারে মাটির স্বাভাবিক উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। মাটি অনুর্বর ও বন্ধাত্ব হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। ভবিষ্যতে অনুর্বর মাটিতে চাষাবাদ বন্ধ হলে তীব্র খাদ্য সঙ্কট দেখা দেবে এমনই মত বিভিন্ন মহলে। তা ছাড়া মাটিতে চাষাবাদে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অত্যধিক ব্যবহারের প্রভাব পড়ছে মানুষের শরীর-স্বাস্থ্যে।
ভারত সরকারের কৃষি ও পরিবেশ দফতর চাষের ক্ষেত্রে জৈব সার ব্যবহার করে মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণের আবেদন জানাচ্ছেন। সেই কর্মসূচিকে মাথায় রেখে একটি আশ্রমিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে বিশ্বজুড়ে ‘সেভ সয়েল’ সচেতনতা প্রচার অভিযান শুরু হয়েছে। গত বছরের ২৬ মার্চ তামিলনাড়ুর কোয়েম্বত্তুর আশ্রম থেকে মধ্যপ্রদেশের যুবক সুরেন্দ্র যাদব সাইকেলে কাশ্মীর পর্যন্ত সচেতনতা প্রচার শুরু করেন। টানা দশ মাস সাইকেল চালিয়ে আঠারোটি রাজ্য অতিক্রম করে ওড়িশা হয়ে শনিবার রাতে তিনি এগরায় পৌঁছন রাতে এগরায় সেই সংস্থার একজন স্বেচ্ছা সেবকের বাড়িতে রাত কাটান। রবিবার সকালে প্রয়োজনীয় খাবার, প্রাথমিক চিকিৎসার সামগ্রী সহ অন্যন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে এগরা হয়ে পটাশপুরে আসেন। সেখান থেকে দুই মেদিনীপুরের মকরসংক্রান্তির তুলসীচারা মেলায় গিয়ে পুণ্যার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। মাটি নিয়ে তাঁদের সচেতন করেন। দুপুরে সেখান থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরে খড়গপুর হয়ে ঝাড়খন্ডের উদ্দেশে রওনা দেন। আগামী দু’মাস এই ভাবেই সাইকেলে বিহার, উত্তরপ্রদেশ হয়ে অরুণাচলপ্রদেশে সচেতনতা প্রচার চালাবেন বলে জানান সুরেন্দ্র।
সুরেন্দ্রর কথায়, ‘‘অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও রাসায়নিক সারের ব্যবহারে মাটির উর্বরতা হারিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে মাটির ফসল উৎদপাদন ক্ষমতা হারিয়ে যাবে। বিশ্বজুড়ে তীব্র খাদ্য সঙ্কট দেখা দেবে। মাটি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই সচেতনতা প্রচার শুরু করেছি। মানুষও এই বিষয়ে খুব আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’’