রেল মাফিয়া শ্রীনু হত্যা মামলায় ধৃত তিনজনের আচমকা জেল বদল ঘিরে শোরগোল পড়েছে মেদিনীপুরে। বুধবার রাতে কৃষ্ণাকে রাওকে পুরুলিয়া জেলে, সঞ্জয় কুমারকে বাঁকুড়া জেলে এবং শঙ্কর রাওকে ঝাড়গ্রাম জেলে সরানো হয়েছে। এ নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ দিয়েছেন মেদিনীপুরের কারাকর্তারা। কিছু বলতে নারাজ শ্রীনু হত্যা মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী সমরকুমার নায়েক। তবে জেলেরই এক সূত্রের দাবি, ধৃতদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই এই জেল বদল। যাবতীয় নিয়মকানুন মেনে ওই তিনজনকে মেদিনীপুর থেকে পৃথক তিনটি জেলে সরানো হয়েছে।
শ্রীনু হত্যা মামলায় এখনও পর্যন্ত আর এক ‘ডন’ বাসব রামবাবু-সহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ১৩ জনের মধ্যে অন্যতম শঙ্কর রাও, সঞ্জয় কুমার এবং কৃষ্ণা রাও। বুধবার মেদিনীপুর জেলা আদালতে ধৃতদের হাজিরা ছিল। শঙ্করদেরও হাজিরা দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ফের মেদিনীপুর জেলে ফেরত আনা হয়। জেলের এক সূত্রে খবর, সন্ধের দিকে বাকি ১০ জন একে একে জেলে ঢুকলেও ওই তিনজনকে ঢোকানো হয়নি। পরে এদের অন্য জেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
বন্দিদের জেল বদল নতুন কিছু নয়। এর আগে শ্রীনু খুনের এই মামলাতেই ধৃত নন্দ দাসেরও জেল বদল হয়েছিল। সবংয়ের ছাত্র খুনের মামলায় ধৃত একজনের জেল বদল নিয়েও সেই সময়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। পুলিশের এক আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় ধৃত একজনকে মেদিনীপুর থেকে হাওড়া জেলে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ছিল। জেলের এক সূত্রের অবশ্য দাবি, নির্দিষ্ট কারণে বিচারাধীন বন্দিকে রাজ্যের যে কোনও জেলে সরানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কারণটা কী? মেদিনীপুরের এক কারাকর্তার জবাব, “এ ভাবে কারণ বলা কঠিন!”
এ দিকে, মেদিনীপুর আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছে শ্রীনু হত্যায় ধৃত তিনজন। ওয়াই বালা, রাজেশ সাহু এবং অরুণ কুমারের ওই আবেদনের শুনানি বৃহস্পতিবার হওয়ার কথা ছিল। তবে হয়নি। মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী সমরকুমার নায়েক বলেন, “এই মামলার বিচার স্পেশ্যাল কোর্টে হবে বলে বুধবারই নির্দেশ হয়েছে। তাই জামিনের আবেদনের শুনানিও স্পেশ্যাল কোর্টে হবে।” বুধবার বরুণ ঘোষ এবং নন্দ দাস নামে ধৃত দু’জনের জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে মেদিনীপুর জেলা ও দায়রা আদালতে।
গত জানুয়ারিতে খড়্গপুরের নিউ সেটলমেন্ট এলাকায় তৃণমূলের ওয়ার্ড কার্যালয়ের মধ্যেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় শ্রীনু ও তার সঙ্গী ধর্মা রাও। ওই ওয়ার্ডেরই তৃণমূল কাউন্সিলর শ্রীনুর স্ত্রী পূজা।