মহকুমা হাসপাতালে রক্তের সঙ্কট। প্রতীকী চিত্র।
গ্রীষ্মের দাবদাহ এখনও শুরু হয়নি। বসন্তের মরসুমেই রক্তের সঙ্কটে ধুঁকছে জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি। আগের মতো বিভিন্ন স্কুল কিংবা রাজনৈতিক দলের আয়োজনে সে ভাবে হচ্ছে না রক্তদান শিবির। দুর্নীতি প্রসঙ্গে জেরবার রাজ্য রাজনীতি। এমন অস্থির রাজনৈতিক পরিবেশে রক্তদান শিবির আয়োজনে আগ্রহ দেখাচ্ছে না পাড়ার ক্লাবগুলিও।
সাধারণত দেখা যায়, শীতের পর বসন্তের সময়েই বিভিন্ন সংগঠনের তরফে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সূত্রের খবর, এ বারে এক ধাক্কায় রক্তদান শিবিরের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। এগরা মহকুমায় ব্লাড ব্যাঙ্কে নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত ‘শূন্য’ ইউনিটে পৌঁছেছে। অন্য দিকে ‘ও পজ়িটিভ’ গ্রুপের রক্ত মাত্র সাত ইউনিট রয়েছে। ‘এ’, 'বি প্লাস’ ও ‘এবি’ গ্রুপের রক্ত যেখানে ১০০’র বেশি ইউনিট থাকে। সেখানে রয়েছে মাত্র ৮৩ ইউনিট। এগরা মহকুমা ব্লাড ব্যাঙ্ক প্রতিমাসে গড়ে ৮০০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করত। সেখানে এ বার ৫০০ ইউনিট রক্তে সংগ্রহ করতেই যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে বলে দাবি। আগে এগরা মহকুমা ব্লাড ব্যাঙ্ক রক্ত সংগ্রহ করে অতিরিক্ত রক্ত কলকাতা-সহ অন্য হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে সরবরাহ করত। এখন সেই ঘটনা অতীত। নিজেদের প্রয়োজনে সেই রক্ত জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শাসকদলের সংগঠন ও ক্লাবগুলিতে সরাসরি যুক্ত থাকেন স্থানীয় সরকারি কর্মী ও শিক্ষক থেকে নেতারা। তাঁরাই উদ্যোগী হয়ে এই সকল রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন। কয়েকমাস রাজ্যের উচ্চ আদালত স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির বেআইনি কর্মীদের চাকরি ছাঁটাই করেছে। ভুয়ো শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের মামলা আদালতে ঝুলে রয়েছে। দুর্নীতির দায়ে নেতা ও মন্ত্রীরা গারদের পিছনে রয়েছে। রাজনৈতিক ও শিক্ষাঙ্গনে এক অস্থির পরিস্থিতি চলছে। বর্তমানে এই সঙ্কট মুহূর্তে শাসকদলের সংগঠনেরগুলিও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে দাবি।
এগরা কলেজের অধ্যক্ষ দীপককুমার তামিলি বলেন, ‘‘এই সময়ে স্কুল, কলেজ ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে রক্তদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করত। বর্তমানে রাজ্যের স্কুলগুলিতে কোনও এক অদৃশ্য কারণে শিক্ষক ও কর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে।’’ এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এক ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, ‘‘আগের থেকে রক্তদান শিবির কমে যাওয়ার ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের জোগান কমেছে। তবে সঙ্কট পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’’