পুরস্কার হাতে। নিজস্ব চিত্র
রজনীকান্তের সিনেমায় রোবট দেখে স্বপ্ন জেগেছিল নিজে হাতে তা বানানোর। সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে পাঁউশির অন্ত্যোদয় অনাথ আশ্রমের কয়েকজন খুদে আবাসিকের। এসেছে জাতীয় স্তরে পুরস্কারও।
‘ইন্ডিয়ান স্টেম ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংস্থা গুরুগ্রামে গত জানুয়ারিতে প্রযুক্তির উপরে ‘নর্থ ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়নশিপ’ প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল। সেখানে দেশের ৭৭টি স্কুলের সঙ্গে পাঁউশি অন্ত্যোদয়ের চার আবাসিক— দশম শ্রেণির ছাত্র উদয় বর্মন, নবম শ্রেণির দুই ছাত্র প্রদ্যুৎ রায় এবং নিতাই দাস, ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সুভাষ বিশ্বকর্মা যোগ দেয়। প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় দিল্লির একটি স্কুল। আর রোবট বানিয়ে দ্বিতীয় হয় উদয়-সুভাষেরা।
আশ্রম সূত্রের খবর, কেন্দ্র সরকারের ‘স্কিল ডেভলপমেন্ট’ কর্মসূচিতে আবাসিকদের রোবটিক্স প্রযুক্তি নিয়ে প্রাথমিক পাঠ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার মত যথেষ্ট ছিল না। এই সময় অন্তোদয়ের পড়ুয়াদের সাহায্য করে আমেরিকার এক খুদে পড়ুয়া রিকি কুণ্ডু। আশ্রমের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে একটি সংস্থা। সেই সংস্থার সঙ্গে জড়িত রিকির পরিবার। ওই সূত্রে আশ্রমেও কয়েকবার দশম শ্রেণির পড়ুয়া রিকি। সে আমেরিকায় রোবট নিয়ে চর্চা করে।
উদয়-সুভাষদের সাহায্য করে রিকি। আমেরিকা থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে এ ব্যাপারে বিস্তৃত বোঝায় সে। টানা এক বছর এ নিয়ে লেগে থাকার পরে এ বছর জানুয়ারিতে এসেছে সাফল্য। ওই প্রতিযোগিতায় একটি রোবট গাড়ি বানিয়েছিল উদয়েরা। উদয় এবং প্রদ্যুতের কথায়, ‘‘রোবট সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। রজনীকান্তের সিনেমায় রোবট দেখে আগ্রহ জেগেছিল। রিকিদা আমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তব করার পথ অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে। আগামী দিনে রোবটিক্স নিয়ে আরও এগিয়ে যেতে চাই।’’
চলতি সপ্তাহে পুরস্কার নিয়ে আশ্রমে ফিরেছে ওই চার আবাসিক। তারপরেই খুশির হাওয়া আশ্রমে। আশ্রমের কর্ণধার বলরাম করণ বলেন, ‘‘এক বছর ধরে আবাসিকদের রোবটিক্স নিয়ে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল। পরে হোয়াটসঅ্যাপে এ সম্পর্কে এক কিশোর বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনেই সফলতা পেয়েছি।’’