খুলতে হবে স্কুল-কলেজ। পোস্টার নিয়ে পথে পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার কাঁথিতে বড় ডাকঘরের সামনে। নিজস্ব চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে কিছুদিন খুললেও আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাজ্যের সমস্ত স্কুল-কলেজ। যদিও করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পরেও শর্তাধীনে সচল রয়েছে পানশালা, বাজার, শপিং মল থেকে বাস, ট্রেন সবকিছুই। তারই প্রেক্ষিতে কোভিড পরিস্থিতিতে দ্রুত ক্লাসরুমে পঠনপাঠনের উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা ও ছাত্রছাত্রীদের টিকাকরণের প্রক্রিয়া চালু রেখে অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবি তুলে আন্দোলনে নামল পড়ুয়ারা।
বৃহস্পতিবার থেকে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০’ বাতিলের দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছে এসইউসির ছাত্রসংগঠন ডিএসও। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার দু’দিনব্যাপী রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়েও চলবে এই কর্মসূচি। এদিন কাঁথি শহরের বড় ডাকঘরের সামনে ডিএসও-র ডাকা অবস্থান-বিক্ষোভের মঞ্চে সামিল হয়েছিল বেশ কয়েকজন পড়ুয়া। একই ভাবে বাজকুল, পাঁশকুড়া ও নিমতৌডিতে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়৷ পড়ুয়াদের অভিযোগ, এই অতিমারির সময়ে ট্রেন-বাস, মেলা, নির্বাচন, বাজার-হাট, রেঁস্তোরা-পানশালা সহ সমস্ত কিছুকে ছাড় দিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কী ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা যায় সে বিষয়ে সরকার পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়৷ আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সমর্থনে ডিএসও-র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘‘করোনা অতিমারিতে সংক্রমণের ফলে দীর্ঘ দু’বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ৷ অনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে খুব অল্প সংখ্যক ছাত্রছাত্রী এই দু’বছরে শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে৷ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বন্ধ থাকায় রাজ্যের এক বিরাট অংশের ছাত্রছাত্রী ইতিমধ্যেই শিক্ষার আঙিনা থেকে দূরে সরে গিয়েছে৷ বিপুলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে স্কুলছুটের সংখ্যা।’’
সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ ক্রমশ নিয়ন্ত্রণে আসছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে বিশেষজ্ঞরা তেমনই দাবি করেছেন।এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, ছাত্র-ছাত্রীদের টিকাকরণ ও ক্লাস রুম ভিত্তিক পঠনপাঠনের উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চালু রেখেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে কেন রাজ্য সরকারের তরফে কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে ইতিমধ্যে শিক্ষক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ডিএসও-র জেলা সভাপতি স্বপন জানা বলেন, ‘‘আসলে করোনা অতিমারির সুযোগকে হাতিয়ার করে সরকার শিক্ষা ধ্বংসের নীল নকশা ‘জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০’র নানা দিক চালু করতে চাইছে৷ এই শিক্ষানীতির অনেক গুলি এজেন্ডার মধ্যে অন্যতম হল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার গুরুত্বকে কমিয়ে দিয়ে অনলাইন মোডে শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া। তা এই সময়েই সরকার চালু করতে চাইছে।’’
এদিন কাঁথি ছাড়াও বাকি যে দুটি জায়গায় অবস্থান-বিক্ষোভ আন্দোলন চলেছে তার প্রতিটি জায়গাতেই করোনা বিধি মেনে ৫০ জনের কম স্কুল এবং কলেজ পড়ুয়াদের নিয়ে কর্মসূচি হয়। আজ, শুক্রবারেও জেলা জুড়ে এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে আন্দোলনকারীদের দাবি। এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) শুভাশিস মিত্রের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য ফোন করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজ পাঠানো হলেও কোনও উত্তর দেননি।