দুর্নীতিগ্রস্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক! স্কুলে ঝুলল তালা

অভিভাবকদের অভিযোগ, যাঁরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন, তাঁদের বাড়ির পড়ুয়াদের ওই শিক্ষক ক্লাসে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৩
Share:

বারান্দাতেই চলছে পড়াশোনা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের বরাদ্দ খরচের ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতর অভিযোগ উঠল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। যার জেরে শুক্রবার স্কুলে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকেরা। তবে তাতে বন্ধ থাকেনি পঠনপাঠন। পাঁশকুড়ার কেশাপাট গ্রাম পঞ্চায়েতের কেন্দুয়াটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ দিন স্কুলের বারান্দাতেই ক্লাস নিলেন শিক্ষকেরা।

Advertisement

পাঁশকুড়া উত্তর চক্রের ওই প্রাথমিক স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে রয়েছেন কিশোর পাহাড়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দু’বছর ধরে গ্রাম শিক্ষা কমিটির সদস্যদের সই নকল করে স্কুলের বরাদ্দ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিষয়টি নজরে আসার পর গ্রাম শিক্ষা কমিটির সদস্য তথা অভিভাবকদের একাংশ ওই শিক্ষককে জানান। অভিযোগ, তিনি তাতে গুরুত্ব দেননি। নব বেরা নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কোনও অভিভাবকের সই নকল করে রেজোলিউশন তৈরি করে তার ভিত্তিতে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দের টাকা তুলে নিয়েছেন। আমরা স্কুলের ব্যাঙ্ক-পাসবই দেখতে চাইলেও উনি দেখাননি।’’

অভিভাবকদের অভিযোগ, যাঁরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন, তাঁদের বাড়ির পড়ুয়াদের ওই শিক্ষক ক্লাসে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করেন। এক অভিভাবক বাপি প্রামাণিক বলেন, ‘‘ওই শিক্ষককে আর্থিক অনিয়মের কথা বললে উনি আমাদের ছেলেমেয়েদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। আমরা এর বিহিত চাই।’’ সমস্ত অভিযোগ অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে লিখিত আকারে জানানো হয় বলে দাবি অভিভাবকদের। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

এ দিন সকালে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দেন অভিভাবকেরা। তবে এ দিন স্কুলে আসেননি অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক। তালা দেওয়ায় বিদ্যালয়ের বাকি তিনজন শিক্ষিকা স্কুলের বারান্দাতেই ক্লাস নেন। স্কুলে তালা ঝোলানোর খবর পেয়ে সেখানে যান পাঁশকুড়ার বিডিও, বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসের দু’জন কর্মী। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষক স্কুলে না থাকায় তাঁরা কোনও আলোচনা করতে পারেননি। পরে পাঁশকুড়ার বিডিও ধেন্দুপ ভুটিয়া বিক্ষোভকারীদের আলোচনার আশ্বাস দিলে তালা খুলে দেওয়া হয়। বিডিও বলেন, ‘‘ওই স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ করেছেন অভিভাবকেরা। দ্রুত দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসব।’’

অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি, ‘‘এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত। কেশাপাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ সাঁতরার উস্কানিতে কয়েকজন অভিভাবক স্কুলে তালা ঝুলিয়েছেন। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাঁরা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে কেশাপাট পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ সাঁতরার বক্তব্য, ‘‘আমি আজ সারাদিন পঞ্চায়েত অফিসে কৃষক বন্ধুর চেক বিলিতে ব্যস্ত ছিলাম। ওখানে কী হয়েছে জানি না। তার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement