বিপাকে অনেক স্কুল

শিক্ষক নেই, বন্ধ পড়ুয়া ভর্তি

পদ আছে, শিক্ষক নেই। শিক্ষক সঙ্কটে পঠন-পাঠন শিকেয় খড়্গপুরের একাধিক স্কুলে। কোথাও সমস্যা মেটাতে প্রাক্তন মেধাবী ছাত্রদের দিয়ে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে কয়েকটি স্কুল, কোথাও আবার একজন শিক্ষককেই নিতে হচ্ছে অতিরিক্ত চাপ। অধিকাংশ স্কুলেই এখন বার্ষিক পরীক্ষা শেষের পথে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০৩
Share:

পদ আছে, শিক্ষক নেই। শিক্ষক সঙ্কটে পঠন-পাঠন শিকেয় খড়্গপুরের একাধিক স্কুলে।

Advertisement

কোথাও সমস্যা মেটাতে প্রাক্তন মেধাবী ছাত্রদের দিয়ে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে কয়েকটি স্কুল, কোথাও আবার একজন শিক্ষককেই নিতে হচ্ছে অতিরিক্ত চাপ। অধিকাংশ স্কুলেই এখন বার্ষিক পরীক্ষা শেষের পথে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শেষ মুহূর্তের পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে। নতুন বছর শুরু হলে কী ভাবে অল্প শিক্ষক দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে খড়্গপুর সিলভার জুবিলি হাইস্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক নেই। কী ভাবে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চলবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের শিক্ষক সিতিকন্ঠ দে বলেন, ‘‘স্কুলে অনেক বিষয়ে শিক্ষকের অভাব রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাস থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক নেই। এখন ওই পদে প্রাক্তন ছাত্রকে নেওয়ার পরিকল্পনা করছি।’’

Advertisement

সুভাষপল্লি জনকল্যাণ বিদ্যায়তনেও রাষ্ট্রবিজ্ঞান, শিক্ষাবিজ্ঞঢান ও কম্পিউটারের শিক্ষক নেই। প্রধান শিক্ষক নিজেই শিক্ষাবিজ্ঞানের ক্লাস নেন। প্রধান শিক্ষক মদনকুমার নাগ বলেন, ‘‘শিক্ষকের অভাবে চলতি শিক্ষাবর্ষে কম্পিউটার সায়েন্সে আমরা ছাত্র ভর্তি নিতে পারিনি। অন্য বিষয়েও শিক্ষকের অভাব। আগামী শিক্ষাবর্ষে হবে তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছি।’’

নিয়ম অনুযায়ী, পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি স্কুলে ৪০ জন পড়ুয়া পিছু একজন করে শিক্ষক নিয়োগ করতে হয়। কিন্তু অধিকাংশ স্কুলেই এই নিয়ম মানা হয়নি বলে অধিকাংশ। খড়্গপুরের ইন্দা কৃষ্ণলাল শিক্ষা নিকেতনে হিন্দির শিক্ষক নেই। ফলে ছাত্রদের বাধ্য হয়ে সংস্কৃত নিতে হচ্ছে। অঙ্ক ও ইংরেজিতে প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষক কম রয়েছে। অঙ্কের পাঁচ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র দু’জন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘কী অসুবিধায় স্কুল চালাচ্ছি বলে বোঝাতে পারব না। যেখানে ৪০ জন পিছু একজন শিক্ষক প্রয়োজন সেখানে ৯৫০ জন পড়ুয়ার জন্য ২ জন ইংরেজি শিক্ষক দিয়ে কী ভাবে চালানো সম্ভব?’’ তাঁর কথায়, ‘‘সব ক্ষেত্রে আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করার ক্ষেত্রেও বাধা অর্থের অভাব। প্রাক্তন ছাত্রদের কখনও ডেকে ক্লাস সামলাতে হয়।’’

বেলদা গঙ্গাধর আকাদেমীর প্রধান শিক্ষক ননীগোপাল শিটও বলেন, ‘‘স্কুলে অঙ্কের ৩ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র একজন। স্কুলের ১৬০০ জন ছাত্রকে অঙ্ক করাতে হয় তাঁকেই। এটা কী সম্ভব!’’ শিক্ষক না থাকায় অনেক স্কুলে কয়েকটি বিষয়ের পঠনপাঠনই বন্ধ করে দিয়ে হয়েছে। দাঁতনের জাহালদা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কালীপদ প্রধান বলেন, ‘‘দু’বছর ধরে শিক্ষক না মেলায় কম্পিউটার সায়েন্স ও হোম সায়েন্স বিষয়ে ছাত্র ভর্তি বন্ধ করে দিতে হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement