আকাশ হালদার। নিজস্ব চিত্র
হস্টেল থেকে স্কুলে এসে প্রার্থনা। তবে প্রথম ক্লাসের শিক্ষক আসার আগে উধাও হয়ে গিয়েছিল এক সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বুধবার থেকে শুক্রবার। কেটে গিয়েছে দু’দিনেরও বেশি। কিন্তু এখনও খোঁজ নেই পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের গোপালপুর ইউনিয়ন রাখাল বিদ্যাপীঠের পড়ুয়া আকাশ হালদারের।
আকাশের পরিবারের দাবি, প্রথমে নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগই নিতে চায়নি পুলিশ। পরে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ অভিযোগ নেয়। অভিযোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে গড়িমসির অভিযোগ উড়িয়ে পুলিশ জানিয়েছে, অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রতিটি থানায় ছেলেটির ছবি পাঠানো হয়েছে। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, আকাশের বাড়ি জেলার নরেন্দ্রপুর থানার ঢালুয়া গ্রামে। আকাশের জেঠু রামচন্দ্র রাজমিস্ত্রির কাজের সুবাদে পটাশপুরে থাকেন। সেই সূত্রেই আকাশকে তিনমাস আগে ভর্তি করানো হয় গোপালপুর ইউনিয়ন রাখাল বিদ্যাপীঠে। স্কুলের হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করত সে। আকাশের সহপাঠীরা জানিয়েছে, গত বুধবার হস্টেল থেকে স্কুলে এসেছিল সে। প্রার্থনাতেও অংশ নিয়েছিল। কিন্তু শিক্ষক ঢোকার আগেই ক্লাসে ব্যাগ রেখে পালিয়ে যায়। বুধবার বিকেল পর্যন্ত খোঁজ না পেয়ে আকাশের পরিবার পটাশপুর থানায় অভিযোগ জানাতে যায়। তবে অভিযোগ, পুলিশ এ ক্ষেত্রে প্রথমে সক্রিয় হয়নি।
স্কুলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আকাশের বাবা শ্যামচন্দ্র। তাঁর কথায়, ‘‘স্কুলে ভরসা করে ছেলেকে পড়তে রেখে এসেছিলাম। সেই স্কুলের ভিতর থেকে ছেলে নিখোঁজ হলো। তাহলে স্কুলের নিরাপত্তা কোথায়।’’ গোপালপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল জানা জানান, বড় গেট বন্ধই ছিল। তবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট দেওয়া- সহ অন্য কাজের জন্য ছোট গেট খোলা ছিল। ক্লাসে বই রেখে ছাত্রটি বোধহয় নজর এড়িয়ে সেই পথে পালিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রটির পরিবারকে এবং থানায় মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে। স্কুলের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী না থাকায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা কিছুটা সময় দেখভাল করেন। প্রধান শিক্ষক আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী দিনে নিরাপত্তা বিষয়ে আরও বেশি জোর দেওয়া হবে। ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে স্কুল সহযোগিতা করছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।