প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণ আটকানোর জন্য বেশি করে লালারসের নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু দাবি, পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে সংগ্রহীত লালারসের নমুনা এত বেশি জমে গিয়েছে যে, নমুনা সংগ্রহের গতি এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে। গত দু’সপ্তাহ ধরে কাঁথি-সহ গোটা নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা জুড়ে এমন পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা সূত্রের খবর, গত ১৯ মে থেকে ১৫০টির বেশি সংগৃহীত নমুনার রিপোর্ট ‘আটকে’ রয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক হারে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলে সেখানে চাপ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য কর্তাদের। কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল সূত্রের খবর, শুধু বুধবার ১৪০ জনের থেকে নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। তার আগের দিন ১৩০ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার লালারস সংগ্রহের প্রক্রিয়া সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রথমে জেলায় সংগৃহীত লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতার নাইসেডে পাঠানো হত। কিন্তু গোটা রাজ্য থেকে লালারসের নমুনা সেখানে পরীক্ষা পড়তে পাঠানোর জন্য ক্রমশ চাপ বাড়ছিল নাইসেড কর্তৃপক্ষের উপর। তারপর সবক’টি জেলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলিকে করোনা পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেইমতো মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়্গ্রাম-সহ জঙ্গলমহলের বহু এলাকা থেকে নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হচ্ছিল।
কিন্তু, গত দুসপ্তাহ ধরে ধরনের বহু নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হলেও সব রিপোর্ট হাতে এসে পৌঁছায়নি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল ছাড়াও দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, চণ্ডীপুর করোনা হাসপাতলে নমুনা সংগ্রহ আপাতত তাই ধীর গতিতে চলছে বলে খবর। এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রতকুমার রায় বলেন, ‘‘গত দুসপ্তাহ ধরে অনেকে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছিল। সব রিপোর্ট এখনও এসে পৌঁছায়নি। তাই সীমিত সংখ্যক লোকের লালারস নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পাঠানো হচ্ছে।’’
সম্প্রতি ভিন্ রাজ্য থেকে বহু পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু গত ১৭ মে রাজ্য সরকার একটি নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়েছে, করোনা উপসর্গ না থাকলে নমুনা পরীক্ষা করা হবে না। এতে নন্দীগ্রামের বহু পরিযায়ী শ্রমিক চিন্তি। কারণ, নন্দীগ্রাম থেকে কয়েক হাজার মানুষ মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, দিল্লিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। লালারসের নমুনা সংগ্রহে ধীর গতি এবং নয়া নির্দেশিকায় তাঁরা স্বাসভাবিক ভাবেই চিন্তিত। এ ব্যাপারে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শুধুমাত্র উপসর্গ রয়েছে এমন লোকেদের লালা রস সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পাঠানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য দফতর থেকে দেওয়া হয়েছে। সেই মতো লালা রস নমুনা সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে।’’