তল্লাশি চলাকালীন কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা। নিজস্ব চিত্র।
সাত সকালেই শিল্পশহর হলদিয়ায় আয়করের হানা। এক পুর পারিষদ-সহ একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়িতে দিনভর চলল তল্লাশি। যা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপড়েন।
স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ কেন্দ্রীয় আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা অন্তত ৭০টি গাড়িতে করে নিয়ে হলদিয়ায় পৌঁছন। তাঁরা হলদিয়ার ভবানীপুর থানা, মহিষাদল থানা এবং হলদিয়া থানায় যান এবং সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ আধিকারিকদের এ দিনের অভিযান সম্পর্কিত নথি জমা দেন। তার পরেই আয়কর দফতরের আধিকারিকরা একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে যান তল্লাশিতে নেমে পড়েন শহরের একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়িতে। যার মধ্যে রয়েছে হলদিয়ার পুর পারিষদ শেখ আসগর আলিরও বাড়ি।
স্থানীয় একটি সূত্রের খবর, আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা ব্যবসায়ী শেখ মুজফফর, অমিত মুখোপাধ্যায়, শুভ্রা ভট্টাচার্য নামে একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়িতেও হানা দেন। ওই ব্যক্তিদের মূলত হলদিয়া বন্দর কেন্দ্রিক ব্যবসা রয়েছে। মুজফফর পুরপারিষদ আসগরের বাবা। তাঁর তালপুকুর, টাউনশিপ, মহিষাদলের বাড়ি এবং একাধিক অফিসে তল্লাশি চলেছে। হলদিয়ায় কমপক্ষে ১৫টি জায়গায় অভিযান চালানো হয়। প্রত্যেকটি বাড়িতে পৌঁছে দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়ে অভিযান চালেছে। বাইরে থেকেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা। হলদিয়ার আজাদ হিন্দ নগরে ব্যবসায়ী অমৃত মুখোপাধ্যায়ে বাড়িতে, অফিসে এবং শুভ্রা ভট্টাচার্যের বাড়িতে ও অফিসে রাত পর্যন্ত চলে তল্লাশি। বাড়িতে কোনও পরিচারিকাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
মুজাফফরের দাবি, ‘‘এটি সম্পূর্ণভাবে শুভেন্দু অধিকারীর ষড়যন্ত্র। রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার আমরা।’’ উল্লেখ্য, ব্যবসায়ী অমিত এক সময় এলাকায় বর্তমান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। তৃণমূলের দাবি, দল বদলে শুভেন্দু এভাবে অন্যদের চাপে রাখার চেষ্টা করছেন। তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘বিজেপি রাজনৈতিকভাবে তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর দিতে না পেরে ইডি, সিবিআই, আয়কর দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে আমাদের দলের নেতা-সমর্থকদের। কিন্তু বাংলার মানুষ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে বুঝিয়ে দিয়েছে বিজেপির জায়গা বাংলাতে নেই।’’ যদিও গেরুয়া শিবিরের স্থানীয় নেতা প্রদীপ কুমার বিজলী বলছেন, ‘‘আয়কর দফতর একটি আলাদা বিভাগ। বিজেপি আর কেন্দ্রীয় সরকার এক নয়। যদি সবাই ঠিকঠাক আয়কর দিয়ে থাকেন, তাহলে তো তাদের চিন্তিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।’’