Higher Secondary

TMC: নেতার মেয়েকে পরীক্ষায় বাড়তি সময়! শিক্ষা দফতরে অভিযোগ 

উল্লেখ্য, যে স্কুলের ঘটনা নিয়ে এত বিতর্ক, সেই কিশোরনগর শচীন্দ্র শিক্ষা সদনে প্রধান শিক্ষক পদের নতুন দায়িত্ব পান রাধামাধব। ‘

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কাঁথি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২২ ০৭:০১
Share:

অভিযোগ পত্র। নিজস্ব চিত্র

মেয়ে দিচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। বাবা হাবিবুর রহমান পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান তথা জেলা পরিষদের কো-মেন্টর। ওই পদের প্রভাব খাটিয়ে ভুয়ো প্রতিবন্ধী শংসাপত্র বানিয়ে হোম সেন্টারে আয়োজিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেয়ের জন্য অতিরিক্ত এক ঘণ্টা সময় পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হাবিবুরের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ওই স্কুলের প্রাক্তন পড়ুয়ারা রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
স্কুল সার্ভিস পরীক্ষা এবং শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতিতে শাসকদল তৃণমূলের নেতাদের দুর্নীতি সম্পর্কে রাজ্যবাসী অবগত। তবে তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের কো-মেন্টর হাবিবুরের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে বিস্মিত জেলাবাসী। স্থানীয় সূত্রের খবর, হাবিবুরের কন্যা আফরোজা রহমান কাঁথি কিশোরনগর শচীন্দ্র শিক্ষা সদনের ছাত্রী। সে এবার উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে। এবার হোম সেন্টার হওয়ায় স্কুলেই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। ওই স্কুলের কয়েক জন প্রাক্তন পড়ুয়া রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরে অভিযোগ করে জানিয়েছেন, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নিজের মেয়েকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান হাবিবুর নিজের প্রভাব খাটিয়েছেন। আর তার জেরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাধামাধব দাস পরীক্ষার নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আফরোজাকে উত্তর লেখার জন্য এক ঘণ্টা করে বাড়তি সময় দিচ্ছেন। অভিযোগকারীদের দাবি, হাবিবুর রহমান তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মেয়ের জন্য ভুয়ো প্রতীবন্ধী শংসাপত্র জোগাড় করেছেন। পরীক্ষায় বাড়তি সময় দেওয়ার জন্য সেই শংসাপত্রকে ‘হাতিয়ার’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

এক অভিযোগকারী বলছন, ‘‘কিশোর নগর স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষকের নিয়োগের ক্ষেত্রে হাবিবুর সহযোগিতা করেছিলেন। তাই বর্তমান প্রধান শিক্ষক তাঁর বিশ্বস্ত। তিনিই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের মেয়েকেও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে অবৈধভাবে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছেন।’’ অভিযোগ মানতে রাজি নন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান হাবিবুর। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে স্কুলের মেধাবী ছাত্রী। তার দৃষ্টিশক্তি অত্যন্ত কম হওয়ায় উচ্চ শিক্ষা সংসদে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হয়েছিল। সংসদের অনুমতিক্রমে অতিরিক্ত এক ঘণ্টা সময় দেওয়া হচ্ছে। আর রাজ্য সরকারের নিয়ম মেনেই ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হয়েছেন।’’

উল্লেখ্য, যে স্কুলের ঘটনা নিয়ে এত বিতর্ক, সেই কিশোরনগর শচীন্দ্র শিক্ষা সদনে প্রধান শিক্ষক পদের নতুন দায়িত্ব পান রাধামাধব। ‘উৎসশ্রী’ পোর্টালের মাধ্যমে তিনি ওই পদে নিযুক্ত হয়েছে। তবে তাঁর নিয়োগ পদ্ধতির স্বচ্ছতা নিয়ে ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন জেলা এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এর মধ্যে ফের হাবিবুরের মেয়েকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাধামাধবের বিরুদ্ধে। রাধামাধব অবশ্য বলছেন, ‘‘অহেতুক অভিযোগ করা হচ্ছে। ওই পরীক্ষার্থী দৃষ্টিশক্তিহীন হিসাবে সংসদ থেকে প্রতি ঘণ্টায় ২০ মিনিট করে অতিরিক্ত সময় পাওয়ার অনুমতি পেয়েছে। তার ভিত্তিতে ওই ওই ছাত্রী বাড়তি সময় পাচ্ছে পরীক্ষায়।’’

Advertisement

হাবিবুর শুধু পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ চেয়ারম্যান বা জেলা পরিষদের কো-মেন্টর নন, তিনি জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক পদেও রয়েছেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও চলছে। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ ওঠে, তবে তা অবশ্যই রাজ্য সরকার বা শিক্ষা দফতরের তদন্ত করে দেখা উচিত।’’ তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি মিলন পাত্র বলেন, ‘‘ঠিক কী হয়েছে তা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে বিশদে জানার চেষ্টা করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement