ভাইয়ের পাতে কোহিনুর-পোখরাজ-ব্রাউনি, মিষ্টিবিলাস দিদিদের

ভাইফোঁটার আগে দিদিদের চিন্তা থাকে তা নিয়ে। একই রকম মিষ্টি কি প্রতি বছর দেওয়া যায়? ভাইফোঁটার আগে ঘরে ঘরে উদ্বেগ কমাতে মিষ্টি ব্যবসায়ীরা তৈরি করেন নতুন নতুন মিষ্টি

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০২:০২
Share:

হলদিয়ার একটি মিষ্টির দোকানে ‘ভাইফোঁটা স্পেশ্যাল’। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

কী মিষ্টি এবার ভাইয়ের পাতে! ভাইফোঁটার আগে দিদিদের চিন্তা থাকে তা নিয়ে। একই রকম মিষ্টি কি প্রতি বছর দেওয়া যায়? ভাইফোঁটার আগে ঘরে ঘরে উদ্বেগ কমাতে মিষ্টি ব্যবসায়ীরা তৈরি করেন নতুন নতুন মিষ্টি। এবারেও পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন দোকানের ভিয়েনে শুরু হয়েছে পাক। নতুন মিষ্টির খোঁজে কোনও কোনও ব্যবসায়ী উঁকি দিয়েছেন বাংলাদেশেও।

Advertisement

এবার তমলুক শহরের বাজারে এসেছে স্ট্রবেরি, চলকেট ও দুধের মিশ্রণে তৈরি নানা স্বাদের মিষ্টি। নতুন মিষ্টিতে খদ্দের টানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তমলুক ছাড়াও মেচেদা, নন্দকুমার, মহিষাদল, হলদিয়া থেকে কাঁথি ও এগরার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা। তমলুকের জেলখানা মোড়ের মিষ্টি ব্যবসায়ী উৎপল সামন্ত জানান, ‘‘এবার আমাদের আকর্ষণীয় মিষ্টি স্ট্রবেরি লাড্ডু ও চকলেট মাডপাই। স্ট্রবেরি ও খোয়াক্ষীর মিশ্রণে তৈরি স্ট্রবেরি চকলেটের স্বাদ পাবেন তমলুকের বাসিন্দারা। এ ছাড়াও স্ট্রবেরি রসগোল্লা, ব্রাউনি নামের নতুন স্বাদের মিষ্টি তৈরি করা হয়েছে ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার জন্য।’’ বড়বাজারের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী তপন মাইতি বলেন, ‘‘এখন মানুষের হালকা মিষ্টির দিকে ঝোঁক বেশি। সেইমত হালকা মিষ্টি বেশি তৈরি করেছি।’’ তপনবাবু জানান, চকলেট ও দুধের সংমিশ্রণে তৈরি চোক্স মিল্ক ও বোর্নভিটা আর ক্রিম দিয়ে তৈরি বোর্নভিটা বেস্ট নামে মিষ্টি দোকানে রাখা হয়েছে। এছাড়া আমের স্বাদযুক্ত ম্যাঙ্গো বাইট, ম্যাঙ্গো বাইট জেলি ও চকলেট রাইস মিষ্টি রয়েছে। প্রতিটির দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত।

হলদিয়া টাউনশিপের এক মিষ্টি ব্যবসায়ী দীপঙ্কর জানা জানান, ফি বছর বিশ্বকর্মা ও ভাইফোঁটার সময় ভাল মিষ্টি বিক্রি হয়। তিনি বলেন, ‘‘এবার আমাদের কোহিনুরের আদলে তৈরি হয়েছে মিষ্টি, নাম কোহিনুর। এ ছাড়া লেবুর খোসার মধ্যে করা হয়েছে মুক্তোগাছা।’’ তবে পোখরাজ ও মিষ্টিবিলাসও দারুণ জনপ্রিয় হবে বলে মনে করেন তিনি। মিষ্টিবিলাস বাংলাদেশের বালিশ মিষ্টির আদলে তৈরি। তবে হলদিয়ায় সেই বালিশে নানা কারুকাজ যোগ হয়েছে। মিষ্টি বিক্রেতা রাহুল রায় জানান, ফ্রুট খোয়া দিয়ে নানা ধরনের মিষ্টি তৈরি করা হয়েছে এবার।

Advertisement

দুর্গাচকের বিশিষ্ট মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সিদ্ধেশ্বর রাউত বলেন, ‘‘আমরা কাজু কমল, কাজু পান ও কেশর রাবড়ি তৈরি করছি।’’ এছাড়া বেশ কয়েকটি দোকানে চেনা মিষ্টিতে পরিবর্তন করা হয়েছে। রসগোল্লায় আনা হয়েছে নানা সুগন্ধ। ছোটদের কথা ভেবে করা হয়েছে নানা ধরনের ফ্রুট মালাই। মধুমেহ রোগীদের জন্যও আনা হয়েছে নানা পদের মিষ্টি।

এগরার মিষ্টি ব্যবসায়ীরা আবার ভাইদের পাতের থেকে দিদিদের ‘পার্সে’র দিকে নজর দিচ্ছেন। কাঁচা মালের দাম বাড়ায় ভাইফোঁটায় মিষ্টির দাম গত বছরের থেকে অনেকটা বেশি। তাই মিষ্টির আকার একটু ছোট করে গত বছরের দামে বিক্রির পরিকল্পনা নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

পটাশপুরের মিষ্টি ব্যবসায়ী কালীপদ সানা বলেন, ‘‘প্রতি বছর লাফিয়ে লাফিয়ে দুধ, ছানা, চিনি ময়দা-সহ একাধিক কাঁচা মালের দাম বেড়েছে। সেই তুলনায় মিষ্টির দাম বাড়েনি। তবে গ্রাহকের কথা ভেবে মিষ্টির দাম কমিয়ে রাখাই হয়েছে।’’ এগরা শহরে ভাইফোঁটায় বাড়তি মিষ্টির জোগান দিতে অতিরিক্ত কারিগর আনা হয়েছে। দোকানে থাকছে চন্দ্রমুখী, মন্দিরা, মৌচাক, ক্ষীর চমচম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement