Migrant labour

কবে তো ফিরেছি! নতুন জামা চায়নি ছেলেমেয়েও

Advertisement

বিজয় মানা, পরিযায়ী শ্রমিক

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:০৯
Share:

প্রতীকী চিত্র

প্রায় কুড়ি বছর হল সোনার কাজ করছি। অন্ধ্রপ্রদেশের নেলোরে থাকতাম। আমার স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে ঘাটালের নিমতলায় গ্রামের বাড়িতেই থাকে। বাবা, মা-সহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও আছেন।প্রতি বছর দুর্গাপুজোর দু’-চার দিন আগে বাড়ি ফিরি। মহালয়ার সময় থেকেই মনটা বাড়ির জন্য টানে। গ্রামের বাড়ি তোড়জোড় শুরু করে দিই। কাজেও খুব একটা মন থাকে না। অথচ এ বার পুজোর ছ’মাস আগেই বাড়িতে চলে এসেছি। তবে মনেই হচ্ছে না পুজো আসছে।

Advertisement

অথচ অন্য বার পুজোর আগে হাতে কত্ত কাজ থাকে। নতুন জামাকাপড় কেনাটা তো একটা পর্ব। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে দু’-চার বার তো বাজারে যেতেই হয়। ভালও লাগে। বাইরে থাকি বলে তো পরিবারকে খুব একটা সময় দেওয়া হয় না। পুজোর ক’দিনও রাত জেগে আশপাশের সব মণ্ডপ সবাই মিলে ঘুরে দেখি। রেস্তরাঁয় যাই। অষ্টমীর দিন নারানারয়ণ সেবা হয়। সেখানেও হাজির থাকি। পুজোর পাঁচ-সাতটা হইহই করে কোথা দিয়ে কেটে যায়, টেরই পাই না। কালীপুজো, দীপাবলির সময় আমাদের সোনার কাজে প্রচুর চাপ। তাই লক্ষ্মীপুজোর পরেই ফের কর্মস্থলে ফিরে যেতাম।

এ বার কী হবে জানি না। গত কয়েক মাস ধরে তো জমানো টাকায় সংসার চলছে। পুঁজি ফুরিয়ে আসছে। কবে সব স্বাভাবিক হবে, আদৌও কর্মস্থলে সব স্বাভাবিক হবে কিনা— চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে। এখন মন পড়ে আছে কর্মস্থলে। আমাদের অনেকেই কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেন। তবে আমার কর্মস্থল নেলোরে কাজের পরিবেশ এখনও স্বাভাবিক হয়নি। ট্রেনও চালু হয়নি। অপেক্ষায় আছি, কখন ফোন আসে!হাতে টাকা না থাকায় বাড়িতে থেকেও পুজোর আমেজ এ বার একেবারেই নেই। সকলের জন্য নতুন জামাকাপড় কিনে দেওয়ার মতো পরিস্থিতিও নেই। ছেলে-মেয়েও নতুন জামা কেনার জেদ ধরেনি। ওরাও হয়তো সবটা বুঝতে পেরেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement