নিষেধ: কানে পালক বা পেনসিল দিয়ে খোঁচানো অনুচিত। নিজস্ব চিত্র
শিশু সাহিত্যে বহু চরিত্র দেখা যায় যাদের পড়তে বসলেই কান কটকট করে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের টেনিদার গল্পের প্যালারামের তো কিছু হলেই কান কটকট করত। কিন্তু কটকট করলেই কানে খোঁচাখুঁজি করা উচিত নয়।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে, তাহলে কান কটকট করে কেন? চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এর নানা কারণ। কর্ণগহ্বরে সংক্রমণ হলেও অনেক সময়ে কানে ব্যথা হয়। কর্ণপটহে সংক্রমণেও এটা হতে পারে। এটা আটকানোর উপায়, নিয়মিত কানের যত্ন নেওয়া। কী ভাবে যত্ন নেওয়া যেতে পারে কানের? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, বেশির ভাগ কানের সংক্রমণ ঠেকানো যায় নিয়মিত সাবধানতায়।
কী ভাবে শিশুর যত্ন নেবেন? তারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রশ্নোত্তরে। দেখতে হবে, কখনও যেন নোংরা জল কানে না ঢোকে। শিশুদের কানের নিয়মিত যত্ন নেওয়া উচিত। লক্ষ্য রাখা দরকার, শিশু সন্তানটি কোনও রকম ব্যথা বেদনা অনুভব করছে কিনা। সবথেকে সাবধান থাকতে হবে, রেগে গিয়েও যেন সন্তানের কানে চড় মারা না হয়। এতে কর্ণপটহের ক্ষতি হতে পারে। তা থেকে কানে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। কিছু ক্ষেত্রে শিশুটি ঠিক মতো কথা বলছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হয়। কিংবা বাবা-মা যা বলছেন সেটা যদি শিশু ঠিক মতো বুঝতে না পারেন তাহলেও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এর অর্থ, শিশুটির শোনার সমস্যা হচ্ছে। শব্দদূষণ এখন দুনিয়ার বড় সমস্যা। শিশুদের কী ভাবে এই দূষণ থেকে রক্ষা করা যেতে পারে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ, প্রবল শব্দ হচ্ছে এমন এলাকায় ঢোকার আগে এয়ার প্লাগ ব্যবহার করা যেতে পারে। আরেকটি বিষয়ও এখন সমস্যার। যা নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে সন্তানদের প্রায়ই ঝামেলা হয়। তারা কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শোনে। আর বাবা-মা বিরক্তি প্রকাশ করে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘসময় হেডফোনে জোরে গান শুনলে সমস্যা পারে।
কানের ময়লা নিজে থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায় তাই অযথা খোঁচাখুঁচি না করাই ভাল। কাঠি, পালক, পেনসিল বা এয়ার বাড না ব্যবহার করাই উচিত। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে যথাযথ কানের ড্রপ ব্যবহার করাই দরকার। এর ফলে ওয়াক্স নরম হয়ে যাবে। এর পরে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে নাক-কান-গলার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মত নেওয়া প্রয়োজন। কারণ কানের মধ্যে দেখতে পাওয়া সব জিনিসই কানের খোল বা ওয়াক্স নয়। অন্য বেশ কিছু জিনিস কানের গহ্বরে ঢুকে যায়। যেগুলোকে কানের ওয়াক্স বলে মনে হয়।
এই রকম জিনিসগুলোর একটি হল, কানের ছত্রাক। যাকে ওটোমাইকোসিস বলে। কানে কিছু জিনিস ঢুকে রইলে এবং তা পুরনো হলে খোলের মতোই দেখায়। যেমন ফলের কালো বীজ, চক বা ছোট বোতাম। বাচ্চারা অনেক সময়েই এগুলো কানে ঢুকিয়ে ফেলে। কিন্তু বকাঝকা খেতে হবে এই ভয়ে বাড়িতে কিছু বলে না। এগুলো বাইরে থেকে দেখলে ওয়াক্স বলেই মনে হয়। কখনও শুকনো পুঁজ বা ময়লাও কানের খোল বলে মনে হয়।