মেলার পথে টোল, বিতর্ক

মেলার পথে গাড়ি আটকাচ্ছেন তাঁরা। তারপর গাড়ি পিছু যেমন খুশি টাকা আদায় চলছে বলে অভিযোগ। গ্রাম পঞ্চায়েতের রসিদও দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সবং শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ২৩:১৭
Share:

তুলসীচারার মেলার পথে। —নিজস্ব চিত্র।

সাতদিনের মেলা চলে দশদিন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোক ভিড় করে মেলায়। সেই মেলায় যাওয়ার গ্রামীণ মোরাম রাস্তাতেই বেঞ্চ পেতে বসে রয়েছেন কয়েকজন যুবক। মেলার পথে গাড়ি আটকাচ্ছেন তাঁরা। তারপর গাড়ি পিছু যেমন খুশি টাকা আদায় চলছে বলে অভিযোগ। গ্রাম পঞ্চায়েতের রসিদও দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

মেলার পথে এমন ‘টোল’ আদায় ঘিরেই বিতর্ক বেধেছে সবংয়ের দশগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। দুই মেদিনীপুরের সীমানায় কেলেঘাই নদীর তীরে এই তুলসীচাড়ার মেলা শুরু হয়েছে গত বুধবার থেকে। মেলা শুরুর দিন থেকেই দশগ্রাম-কোলন্দা রাস্তা ও বাঁধ বরাবর রাস্তায় অস্থায়ী নাকা করে বেঞ্চ পেতে বসে রয়েছেন কয়েকজন যুবক। টোটো, গাড়ি, ট্রেকার, বাস-ট্রাক ও মিনি বাস আটকে চলছে টাকা আদায়। গ্রাম পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্তক্রমেই ওই টাকা আদায় হচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। তবে টাকা আদায়ে কোনও নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এমনকী ‘রেট-চার্ট’ লুকিয়ে রেখে গাড়ি পিছু অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলায় যাওয়ার রাস্তার মেরামতের জন্যই প্রতি বছর এই টোল আদায় করা হয়। এ বারও করা হচ্ছে। আর টাকার অঙ্কও বাড়ানো হয়নি। পঞ্চায়েতের দাবি, ‘রেট চার্ট’ দেখিয়েই টোল আদায়ের নিয়ম রয়েছে। অভিযোগ, সেই ‘রেট-চার্ট’ লুকিয়ে প্রায় দ্বিগুণ টাকা দর্শনার্থীদের থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। মেদিনীপুর থেকে বুধবারই গাড়িতে মেলায় গিয়েছিলেন ব্যবসায়ী অরূপকুমার সাহু। তিনি বলেন, “আমার আদি বাড়ি সবংয়ে। তাই প্রতিবছর মেলায় যাই। কোনওবার এভাবে টোল আদায় করতে দেখিনি।’’ তিনি আরও জানান, এ বার গ্রাম পঞ্চায়েতের টোল বাবদ গাড়ির জন্য ৪০ টাকা চাওয়া হয়। অনেক অশান্তির পরে রেট-চার্ট বের করলে গাড়ি পিছু ২০টাকা লেখা দেখা যায়। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও সুফল পাননি বলে তাঁর অভিযোগ। শেষে টাকা দিয়েই মেলায় গিয়েছেন। সবংয়ের তেমাথানির বাসিন্দা অরিজিৎ দাস অধিকারীও বলেন, “শুনছি রেট চার্ট ছাড়া অতিরিক্ত টাকা আদায় হচ্ছে। এতে তো বাইরে থেকে আসা দর্শনার্থীদের কাছে সবংয়ের বদনাম হবে। প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।”

Advertisement

এই রসিদ কেটেই গাড়ি থামিয়ে টাকা আদায়।

ঘটনায় সমর্থন নেই মেলা কমিটিরও। মেলা কমিটির সদস্য সুজয়রঞ্জন দাস বলেন, “এভাবে দর্শনার্থীদের থেকে টোল আদায় আমরাও সমর্থন করি না। কিন্তু এটা তো গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষয়। তাই ওঁরা ভাল বলতে পারবেন।”

কী বলছে পঞ্চায়েত? প্রধান অনিল সাঁতরা বলেন, “বহু বছর ধরে এই টোল আদায় হচ্ছে। এ বার আমরা গত বছরের নিয়মেই টাকা নিচ্ছি। কিন্তু অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। আমি ওই কাজে নিযুক্ত কর্মীদের সতর্ক করেছি।” সবংয়ের বিডিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমিও শুনছি গাড়ি পিছু ৪০টাকা নেওয়া হচ্ছে। রেট-চার্ট ছাড়া যদি সেই টাকা আদায় হয় সেটা ঠিক নয়। আমি খোঁজ নিচ্ছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement