প্রতীকী ছবি।
ব্লকের একমাত্র করোনা রোগী বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্স চালক রাজু মণ্ডল মারা গিয়েছেন দুর্ঘটনায়। আর কেউ রাজি না হওয়ায় রাজুই এগিয়ে এসেছিলেন ওই কাজে। কিন্তু এখন তিনি না থাকায় হন্যে হয়ে নতুন চালক খুঁজতে ব্যস্ত কোলাঘাট ব্লক প্রশাসন। জেলায় যে ভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তাতে সমস্যার সমাধানে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন কোলাঘাটের বিডিও।
রবিবার সকালে মেচগ্রাম মোড়ে দু’জন করোনা রোগীকে বড়মা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান কোলাঘাট ব্লকের একমাত্র করোনা অ্যাম্বুল্যান্স চালক রাজু। পরিযায়ী শ্রমিকেরা ঘরে ফিরতে শুরু করার পর জেলায় করোনার সংক্রমণ বাড়ছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। কোলাঘাট ব্লকেও বাড়তে শুরু করে করোনা পজ়িটিভের সংখ্যা। শুধু করোনা রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই নয়, করোনা উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের করোনা পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া-আসার কাজও করতেন রাজু। করোনা পরীক্ষার লালারসের নমুনা আনা বা কীট সংগ্রহ করে আনা সব কাজেই ভরসা ছিলেন রাজু। গত দেড় মাসে করোনা সংক্রান্ত সমস্ত রকম কাজকর্ম নখদর্পণে হয়ে গিয়েছিল তাঁর। রাজুর মতো দক্ষ চালককে পেয়ে অনেকটাই নিশ্চিন্ত ছিলেন কোলাঘাট ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। কিন্তু জেলায় করোনার দাপট যখন ক্রশ বাড়ছে, সেই সময় এমন দক্ষ করোনা যোদ্ধাকে হারানোয় করোনা সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে চিন্তায় কোলাঘাট ব্লক প্রশাসন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন অ্যাম্বুল্যান্স চালকের খোঁজে তোড়জোড় শুরু হয়েছে প্রশাসনিক মহলে। কোলাঘাট ব্লকে নিশ্চয় যান প্রকল্পের আওতায় একটি অ্যাম্বুল্যান্সকে আপাতত করোনা রোগী বহনের কাজে লাগানোর চিন্তা-ভাবনা করছে কোলাঘাট ব্লক প্রশাসন। বিডিও মদন মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজুর জায়গায় নতুন চালকের খোঁজ চলছে। আপাতত নিশ্চয় যান প্রকল্পের গাড়িটি ব্যবহার করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়ে ব্লক স্বাস্থ্য প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
রবিবার রাত ৮টা নাগাদ রাজুর দেহ নিয়ে আসা হয় পাইকপাড়ি গ্রামে তাঁর বাড়িতে। সঙ্গে ছিলেন কোলাঘাট ব্লক ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। রবিবারের দুর্ঘটনায় মৃত বৈষ্ণবচক এলাকার কাশিগোড়ি গ্রামের করোনা আক্রান্তের দেহ ওই রাতে বড়মা হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় হলদিয়ায়। সেখানে সরকারি উদ্যোগে সৎকার করা হয় দেহটি। রবিবার মেচগ্রাম মোড়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে যে লরিটির পিছনে ধাক্কা মেরেছিল অ্যাম্বুল্যান্সটি সেই লরিটি আটক করেছে পুলিশ। লরির চালক পলাতক। আটক করা হয়েছে লরির খালাসিকে। তবে এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের জাতীয় সড়ক দখল করে লরির বেআইনি পার্কিং নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ট্রাফিক দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কের ধারে বেআইনি পার্কিং রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’