খাবার খেয়েই গ্রহণ দর্শন 

প্রায় একদশক পরে ভারত থেকে সূর্যের বলয়গ্রাস দেখা গেল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০০
Share:

মেঘলা আকাশের জন্য জেলায় ভাল দেখা গিয়েছে পৌনে ১০টার দিকে

সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ। সঙ্গে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। সূর্যের বলয়গ্রাস দেখা যাবে কিনা চিন্তায় ছিলেন অনেকেই। কিন্তু সকাল পৌনে ১০টার পর থেকে তাঁদের কপালের চিন্তার ভ্রূকুটি অনেকটাই কেটে যায়। জেলার বিভিন্ন অংশ থেকে মানুষ দেখতে পান সূর্যের গ্রহণ।

Advertisement

প্রায় একদশক পরে ভারত থেকে সূর্যের বলয়গ্রাস দেখা গেল। এই গ্রহণে গোটা সূর্য চাঁদের আড়ালে ঢাকা পড়ে না। তার ফলে সূর্যের বাইরের অংশটিকে উজ্জ্বল বলয় হিসেবে দেখা যায়। সেই বলয়গ্রাস শুধু মাত্র দক্ষিণ ভারতের একাংশ থেকেই দেখা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু আংশিক গ্রহণ দেখতে পেয়েছেন জেলাবাসীও।

এ দিন গ্রহণ দেখার জন্য এবং সূর্যগ্রহণ সংক্রান্ত কুসংস্কার দূর করতে উদ্যোগী হয়েছিল জেলার বিভিন্ন বিজ্ঞানমনস্ক সংগঠন। শিবির করে তারা। স্কুল-কলেজের তরফেও গ্রহণ দেখানোর আয়োজন করা হয়েছিল। গ্রামাঞ্চলে সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ সংক্রান্ত নানা কুসস্কার রয়েছে। যেমন, গ্রহণের সময় খেতে নেই, রান্না করা খাবার ফেলে দিতে হয় বা তাতে তুলসি পাতা দেওয়া। সেই সব সংস্কার দূরে সরিয়েই এ দিন বিভিন্ন শিবিরের ভিড় করেছেন তরুণ-তরুণী থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। বহু শিবিরে গ্রহণ চলাকালীন খাওয়ানোরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

Advertisement

‘ব্রেক থ্রু সায়েন্স সোসাইটি’র পক্ষে জানানো হয়েছে, মানুষকে সূর্যগ্রহণ দেখাতে জেলা জুড়ে ৩০টি শিবির করা হয়েছিল। শিবিরে ছিল টেলিস্কোপ, সূচিছিদ্র ক্যামেরা, সূচিছিদ্র টেলিস্কোপ ও সান ফিল্টারের ব্যবস্থা। তমলুক শহর সংলগ্ন কুলবেড়িয়া ভীমদেব বিদ্যাপীঠ হাইস্কুল চত্বরে শিবির হয়েছিল। স্টিমার ঘাটেও সান ফিল্টার চশমা দিয়ে সূর্যগ্রহণ দেখেছেন অনেকে। সেখানে বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা-সহ আলোচন সভা, ক্যুইজ প্রতিযোগিতা হয়। ভীমদেব বিদ্যাপীঠ এবং দক্ষিণ নারিকেদা হাইস্কুলে ১০০ এর বেশি পড়ুয়াকে ওই বিশেষ চশমা পরে দেওয়া হয়েছিল। শিবির ছিল নন্দকুমারের ঠেকুয়াচকে। শিবির হয়েছে পাঁশকুড়া বনমালী কলেজ, কাঁথির কলেজে, কোলাঘাটের গৌরাঙ্গ ঘাটে, হলদিয়ায় হলদি নদীর তীরে।

সোসাইটির তরফে অনুপ মাইতি বলেন, ‘‘সকাল ৮টা ৩৭ মিনিট থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সূর্যগ্রহণ চললেও আমাদের এখানে সকাল ৯টা ৫২ মিনিট নাগাদ সূর্যের সর্বাধিক অংশ ঢাকার দৃশ্য দেখা গিয়েছে। এদিন পড়ুয়াদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও বেশ আগ্রহ দেখা গিয়েছে।’’ গ্রহণ সংক্রান্ত কুংস্কারের বিরুদ্ধে লড়তে যে প্রচারও চালানো হয়েছে, তা জানিয়েছেন তিনি। তাতে কিছুটা লাভ হলেও, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে অনেকেই কুসংস্কার মেনেছেন বলে জানাচ্ছেন সংস্থার কর্মকর্তারাই। সংস্থার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুমন্ত শী বলেন,‘‘গ্রহণ চলাকালীন খেতে নেই, এটি ভুল ধারণা। আজও অনেকেই গ্রহণ চলাকালীন না খেয়ে ছিলেন বলে আমরা খবর পেয়েছি। আমাদের আরও প্রচার করতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement