লক্ষ্য স্মার্ট ক্যাম্পাসের তকমা। এ বার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মচারী ও পড়ুয়াদের দেওয়া হবে স্মার্ট কার্ড। আগামী এক মাসের মধ্যেই স্মার্ট কার্ড বিলি শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সূত্রে খবর, ‘স্মার্ট ক্যাম্পাস’-র তকমা পেতে হলে কয়েকটি শর্তপূরণ করতে হয়। এক, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো চত্বরে ওয়াই ফাই পরিষেবা থাকতে হবে। দুই, সিসিটিভির আওতায় থাকতে হবে পুরো চত্বর। স্মার্ট ক্লাসরুম ও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা চালু করতে হবে। পড়ুয়া-শিক্ষক সকলের কাছে স্মার্ট কার্ড থাকতে হবে। ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ওয়াইফাই পরিষেবা চালু হয়েছে। রয়েছে সিসিটিভির নজরদারিও। এ বার স্মার্ট কার্ড তৈরিরও বরাত দেওয়া হয়েছে।
কী এই স্মার্ট কার্ড?
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সূত্রে খবর, স্মার্ট কার্ডে ব্যবহারকারীর নাম, রক্তের বিভাগ, বাড়ির ঠিকানা লেখা থাকবে। বিশ্ববিদ্যালেয়র প্রতিটি শ্রেণিকক্ষের দরজার পাশে লাগানো থাকবে বিশেষ যন্ত্র। ওই যন্ত্রে ‘স্মার্ট কার্ড’ ঠেকালে তবেই খুলবে শ্রেণিকক্ষের দরজা। ক্লাস নেওয়ার জন্য শিক্ষকদেরও এই কার্ড নিয়েই শ্রেণিকক্ষে ঢুকতে হবে। কার্ড ছাড়া শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরনোও যাবে না।
পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার জানা যাবে এই কার্ডের মাধ্যমে। কোনও পড়ুয়ার সারা বছরের পরীক্ষার ফল এই কার্ডে নথিভুক্ত থাকবে। পরবর্তীকালে এই কার্ডই অ্যাডমিট কার্ড হিসেবে গণ্য হবে। ক্যান্টিনে খাওয়ার জন্য প্রিপেড কার্ড হিসেবে এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা বলেন, “স্মার্ট কার্ড একেবারে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা চালু হলে সব দিক থেকেই সুবিধা। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্মার্ট’ হওয়া নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোর। এসএফআইয়ের নেতা সৌমিত্র ঘোড়ই বলেন, “শুধু মুখে বললেই তো আর হল না! বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন কিংবা পরিকাঠামো বদলাচ্ছে কোথায়! শুধু একের পর এক ঘরে নতুন রং হচ্ছে!” ডিএসও- র নেতা রাকিবুল হাসান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মার্ট ক্যাম্পাস পরে। আগে দরকার দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, পড়াশোনার মানোন্নয়ন এবং ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ।” এ নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক স্বদেশ সরকার বলেন, “একের পর এক পরিকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে। এটা ওদের সহ্য হচ্ছে না। স্মার্ট ক্যাম্পাস আধুনিক ব্যবস্থা। এটা হলে বিশ্ববিদ্যালয় আরও অনেকটা এগিয়ে যাবে!”
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সূত্রে খবর, প্রথম পর্যায়ে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ফিনান্স ডিপার্টমেন্ট এবং দূরশিক্ষা দফতরের আধিকারিক- কর্মীদের এই কার্ড দেওয়া হবে। পরে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের হাতেও তুলে দেওয়া হবে স্মার্ট কার্ড। এই প্রক্রিয়া নভেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলেই আশাবাদী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দীর কথায়, “বাকি সব কাজই দ্রুত গতিতে করার চেষ্টা চলছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তার কথায়, “স্মার্ট ক্যাম্পাসের তকমা পাওয়া খুব সহজ নয়। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় সেই দিকেই এগোচ্ছে। ইউজিসি- র গাইড লাইন ধরেই কাজ হচ্ছে। এরফলে, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নও হবে।” কবে বিশ্ববিদ্যালয় আরও স্মার্ট হয়, সেটাই দেখার।