রেজাল্ট প্রকাশের পরে শুভেচ্ছাবার্তা দেবস্মিতাকে। নিজস্ব চিত্র
সালটা ২০১৫। মাধ্যমিকের ফল বেরিয়েছে। একটুর জন্য মেধা তালিকায় সেরা দশে ঠাঁই পায়নি দাদা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে ২০২০ সাল। দাদার সেই অপূর্ণতা ঢেকে দিল বোন। মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলে মেধা তালিকায় শুধু তৃতীয় স্থান নয়, রাজ্যে মেয়েদের মধ্যে প্রথম হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে দেবস্মিতা মহাপাত্র। এগরার ভবানীচক হাইস্কুলের ছাত্রীটি এবার মাধ্যমিক ৬৯০ নম্বর পেয়েছে। ছেলের ফল নিয়ে যে আক্ষেপ ছিল, পাঁচ বছর বাদে মেয়ে মহাপাত্র পরিবারের সেই আক্ষেপ ঘুচিয়ে দিয়েছে।
কাঁথি খড়্গপুর বাইপাস থেকে কিছুটা এগিয়ে কিশোরনগর এলাকায় সৃজনী কলোনিতে বাড়ি দেবস্মিতার। বুধবার সকাল দশটা থেকে টিভির পর্দায় চোখ ছিল দেবস্মিতা, বাবা দেবাশিস, মা স্বপ্না মহাপাত্র এবং দাদা দেবপ্রিয়র। তৃতীয় স্থানাধিকারী হিসেবে দেবস্মিতার নাম ঘোষণা হতেই আনন্দে ফেটে পড়ে মহাপাত্র পরিবার। তারপর শুধুই ঘন ঘন শুভেচ্ছা ফোন। কখনও সহপাঠীর, কখনও শিক্ষক-শিক্ষিকা, কখনও আত্মীয়-স্বজনদের। মুখে মাস্ক পরেই বাড়িতেও চলে আসেন অনেক শুভানুধ্যায়ী।
বাংলায় ৯৯, ইংরেজিতে ৯৯, ভূগোলে ৯৯, গণিতে ১০০, জীবনবিজ্ঞানে ৯৮, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৮ ও ইতিহাসে ৯৮ নম্বর পেয়েছে দেবস্মিতা। তবে তার প্রতিক্রিয়া, ‘‘এমন রেজাল্ট করব ভাবিনি। কারণ পড়াশোনার জন্য নির্দিষ্ট সময় ছিল না। ইচ্ছে হলে পড়তে বসতাম। প্রতিটি বিষয়ে গৃহশিক্ষক ছিল। ভূগোলটা বরাবর বাবা-মায়ের কাছেও পড়েছি।’’ বাবা কাঁথি বনমালিচট্টা হাইস্কুল এবং মা ভবানীচক হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। দু’জনেই ভূগোলের শিক্ষক।
জীবন বিজ্ঞান তার সবচেয়ে প্রিয় বিষয় হলেও দেবস্মিতা ভালবাসে প্রচুর গল্পের বই পড়তে। নিয়মিত টিভিও দেখে সে। নিজেই জানায়, টিভিতে সিনেমা বিশেষত থ্রিলারের প্রতি তার ঝোঁক বেশি।প্রিয় অভিনেতা আবির চট্টোপাধ্যায়। দেবস্মিতার কথায়, ‘‘এতটাই ফ্যান যে ওঁর একটা সিনেমাও মিস করি না।’’ এদিন একটি সংবাদ চ্যানেলের মাধ্যমে আবির তাকে শুভেচ্ছাও জানান বলে জানিয়েছে দেবস্মিতা। ভবিষ্যতে নিট পরীক্ষা দিয়ে চিকিৎসক হতে চায় সে। তার জন্য এখন থেকেই মানসিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |