—প্রতীকী চিত্র।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বাম শরিক সিপিএমের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে বিজেপি এবং তৃণমূলের সঙ্গে স্থানীয় স্তরে জোট করে প্রার্থী দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীদের একাংশ বিজেপি ও তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে গ্রামপঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠন করেছিলেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েন সিপিএম জেলা নেতৃত্ব।
দলীয় সূত্রের খবর, দলের এরিয়া কমিটির সম্পাদকদের রিপোর্টের ভিত্তিতে পূর্ব মেদিনীপুরে দলবিরোধী কাজ ও অন্তর্ঘাতে অভিযুক্ত মোট ২৩২ জন স্থানীয় নেতা তথা পার্টি সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়। এর পরেই দলের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া মেনে জেলা নেতৃত্ব তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করে। ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দলের শাখা সম্পাদক ও পার্টি সদস্য মিলিয়ে জেলার মোট ৬০ স্থানীয় নেতা-কর্মীকে দল বিরোধী কাজের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও প্রায় ১০০ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এখনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ’’গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে ও পরবর্তী সময় দলের যেসব স্থানীয় নেতৃত্ব সহ পার্টি সদস্যদের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজ ও অন্তর্ঘাত করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁদের চিহ্নিত করার পরে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এভাবে জেলায় মোট ২৩২ জন স্থানীয় নেতৃত্ব সহ পার্টি সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ইতিমধ্যে ৬০ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে ও প্রায় ১০০ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’’
পূর্ব মেদিনীপুরের মতো রাজনৈতিক ভাবে স্পর্শকাতর জেলা, যেখানে সাংগঠনিক শক্তির নিরিখে বামেরা এখন বেশ দুর্বল সেখানে লোকসভা ভোটের আগে এক সঙ্গে এত জন নেতা-কর্মী বহিষ্কৃত হলে নির্বাচনে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে কিনা, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য দলের রাজ্য নেতৃত্ব নির্দেশিকা দিয়ে রেখেছেন। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি ও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে সমদূরত্বের নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় স্তরে দলের নেতা ও কর্মীদের একাংশ যে ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ও তাঁর পরবর্তী সময়ে ওই দুই প্রধান বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করছেন তা নেতৃত্ব মানতে পারছেন না। কারণ, তাতে মানুষের কাছে দলের নীতি সম্পর্কে ভুল বার্তা যাচ্ছে।
জেলায় সাংগঠনিক নিয়ম মেনে চলতি বছরে নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলছে। এর জন্য আবেদন জমা নেওয়ার পরে খতিয়ে দেখে এখনও পর্যন্ত ৫৮৫ জন নতুন সদস্যকে যোগ করা হয়েছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সদস্য পদের আবেদন জমা নেওয়া হবে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন,’’দলের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া মেনে জেলার সব এলাকা থেকে নতুন সদস্য সংগ্রহকরা হচ্ছে।’’