নোটের গেরোয় মাছ-পান-সব্জি বিক্রিতে ভাটা

নোটের চোটে সপ্তাহ খানেক ধরেই নানা সমস্যার ছবি দেখেছে সারা রাজ্য। আবার অনেকেই হাসিমুখে সব সমস্যা মেনেও নিয়েছেন। প্রধামনন্ত্রীর নোট নির্দেশের এক সপ্তাহ পরও সেই মিশ্র প্রতিক্রিয়াই দেখল জেলা।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০০:১৫
Share:

খদ্দের কই? নিজস্ব চিত্র।

চিত্র এক: সকাল দশটায় ব্যাঙ্কের লাইনে বেজার মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তমলুকের এক মাছ ব্যবসায়ী। কতক্ষণ দাঁড়িয়ে রয়েছেন? প্রশ্ন শুনেই ঝাঁঝিয়ে উঠলেন। বললেন, ‘‘মাছের ব্যবসা হয় সকালে। আমি তিন ঘণ্টা লাইন দিয়ে টাকা তুলছি। ব্যবসাটা উঠে যাবে।’’

Advertisement

চিত্র দুই: তমলুকের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক সব্জি ব্যবসায়ী। হেসেই বললেন, ‘‘সমস্যায় পড়েছি ঠিকই। এর ফলে যদি দেশের উপকার হয়, এটুকু কষ্ট করতে পারব না? লোকে তো ফর্ম তোলার জন্য রাত জেগে লাইন দেয়!’’

নোটের চোটে সপ্তাহ খানেক ধরেই নানা সমস্যার ছবি দেখেছে সারা রাজ্য। আবার অনেকেই হাসিমুখে সব সমস্যা মেনেও নিয়েছেন। প্রধামনন্ত্রীর নোট নির্দেশের এক সপ্তাহ পরও সেই মিশ্র প্রতিক্রিয়াই দেখল জেলা।

Advertisement

নোটের গেরোয় পূর্ব মেদিনীপুরে পান, ফুল চাষে যে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে, সে কথা বলছেন চাষিরাই। বড়বাজারের সব্জি ব্যবসায়ী শচিন হাজরা অবশ্য প্রথম দিকে খরিদ্দারের কাছ থেকে ৫০০, ১০০০ টাকার নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমরা যে পাইকারি সব্জি বাজার সব্জি কিনি সেখানে ব্যবসায়ীরা ওই নোট নিতে না চাওয়ায় অসুবিধায় পড়েছি। ব্যাঙ্কে গিয়েও এক সঙ্গে বেশি টাকা বদলের সুযোগ নেই। বিক্রি তো কমেছে বটেই।’’

তমলুকের মাছ ব্যবসায়ী নান্টু ভঞ্জ জানান, মাছের আড়তে পুরনো টাকা না নেওয়ায় অসুবিধা হচ্ছে। খদ্দেরদের থেকে পুরনো টাকা না মেলায় বিক্রিও হচ্ছে কম। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিন সকালে মাছ নিয়ে এসে বেলা ১২ টা পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়। এরপর ব্যাঙ্কে গিয়ে লাইন দিয়ে টাকা বদল করব কখন! টাকার সমস্যায় ব্যবসায় আয় কমে গিয়েছে।’’ ফুল ব্যবসায়ী প্রশান্ত পড়িয়ার কথায়, ‘‘গাঁদা ফুল এক সপ্তাহ আগে ২০–৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। গাঁদার দাম ১০-১৫ টাকা কেজিতে নেমে এসেছে। ’’

তবে কিছুটা সমস্যা হলেও তা মেনে নিতে রাজি নোনাকুড়ি বাজারের পান ব্যবসায়ী গৌরহরি মাজী। তিনি জানান, পান বাজারে আসা চাষিদের কাছ থেকে পুরনো টাকার নোট ব্যবহার করেই পান কেনা হচ্ছে। ফলে পান কেনায় খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। তবে ব্যাঙ্কে গিয়ে চাহিদামত টাকা তুলতে না পারায় কিছুটা তো অসুবিধা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘ দূরপাল্লার ট্রেনে পান রফতানিতে পার্সেল বুকিং করতে টাকা দেওয়া নিয়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে সার্বিক স্বার্থে আমরা এই সমস্যা মেনে নিতে রাজি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement