প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরে চোখ রাঙাচ্ছে স্ক্রাব টাইফাসও। যে ভাবে এই রোগ ছড়াচ্ছে তাতে উদ্বিগ্ন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশও। চলতি মরসুমে এখনও পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা তিনশো ছুঁইছুঁই। আক্রান্তদের কয়েকজন আবার শিশু-কিশোর। স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে মেদিনীপুর-সহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে বেশ কয়েকজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার অবশ্য দাবি, ‘‘স্ক্রাব টাইফাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। রোগ প্রতিরোধে যে পদক্ষেপ করার করা হচ্ছে।’’ জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বক্তব্য, এলাকা অপরিচ্ছন্ন থাকলে এই রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে। ফলে, রোগ এড়াতে গেলে এলাকার পরিবেশ রাখতে হবে। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, ‘‘এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ব্লকগুলিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’
স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে মেদিনীপুরের এক নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শহরের রামকৃষ্ণনগরের এক বাসিন্দা। ১৭ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। শুরুতে শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ফিরে ফের মেদিনীপুরের এক নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন তিনি। রক্ত পরীক্ষার পরে বোঝা যায় যে তিনি স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত। রোগীর এক পরিজনের কথায়, ‘‘জ্বর হয়েছিল। কিছুতেই কমছিল না। ওঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। রক্ত পরীক্ষার পরে জানা গিয়েছে যে উনি স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত।’’ রোগীর ওই পরিজনের কথায়, ‘‘ব্যবসার কাজে উনি নানা এলাকায় যান। কী ভাবে এতে আক্রান্ত হয়েছেন জানি না।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, চলতি মরসুমে এখনও পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ২৯৪ জন। এর মধ্যে অনেকে শালবনির বাসিন্দা। কেশপুরের কয়েকজনও এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক মানছেন, ‘‘আক্রান্তদের অনেকেই শালবনির। ওই সব এলাকা চিহ্নিত করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ ওই সূত্রের দাবি, স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে জেলার কারও মৃত্যু হয়নি। এক অসমর্থিত সূত্র জানাচ্ছে, মাস খানেক আগে শালবনির এক যুবকের জ্বরে মৃত্যু হয়েছিল। পরে ওই মৃত্যুর কারণ পর্যালোচনা করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ওই যুবক স্ক্রাব টাইফাসেই আক্রান্ত হয়েছিলেন। জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বক্তব্য, সময়ে চিকিৎসা হলে এই রোগ নিরাময় সম্ভব। তিনি মানছেন, ‘‘অনেকেই শুরুতে ভাবেন সাধারণ জ্বর হয়েছে। সমস্যা এখানেই।’’ জ্বর হলেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার এবং রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।