থিম-স্কুল: ঝাড়গ্রাম শহরের একটি পুজোয়। নিজস্ব চিত্র
ছিমছাম একটি প্রাথমিক স্কুল ‘ঋষি অরবিন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়’। সেটাই হল থিমের মণ্ডপ! আদর্শ একটি প্রাথমিক স্কুল কেমন হওয়া উচিত সেটাই ফুটিয়ে তুলেছেন ঝাড়গ্রাম শহরের অরবিন্দ পল্লি এলাকার অরবিন্দ সঙ্ঘের সদস্যেরা। তাদের পুজো এ বার ৩০ বছরে পা দিল। আয়োজকেরা জানান, একটি আদর্শ ও নির্মল বিদ্যালয় কেমন হওয়া প্রয়োজন সেটাই থিমে দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি, দরিদ্র ছেলেমেয়েদের স্কুলমুখী করার জন্য সচেতনতার বার্তাও রয়েছে। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শৌচাগার ব্যবহারের উপরে।
ঝাড়গ্রাম শহরের কদমকানন এলাকার কদমকানন ইউনাইটেড ক্লাবের পুজোর এ বার ১৬ বছর। থিমের বিষয় কন্যা। কন্যাশ্রীদের জয়গান গাওয়া হলেও এখনও সমাজে কন্যা ভ্রূণ হত্যা চলেছে। তাই এই পুজোর থিমে দু’টি হাতের আদলে মণ্ডপ। সেই হাতে ভালবাসার প্রতীকে সযত্নে রক্ষা করা হয়েছে একটি কন্যা ভ্রূণ। কন্যাভ্রূণ হত্যাকে নানা প্রতীকে তুলে ধরা হয়েছে এখানে। পুজো কমিটির সম্পাদক প্রতিম মৈত্র জানালেন, থিমের ভাবনায় রয়েছেন স্থানীয় স্কুল ও কলেজ পড়ুয়ারা। নারী পুরুষের সমানাধিকারের দাবিতেই এমন থিমের ভাবনা।
ঝাড়গ্রাম শহরের নতুনডিহি এলাকার নয়নদার কোচিং-এর পুজো ১৫ বছরে পড়ল। থিম ‘নেশামুক্ত ছাত্রসমাজ’। ধূমপান, মদ্যপান ও ড্রাগের নেশার কুফল নিয়ে রয়েছে চিত্র প্রদর্শনী। পূর্ব মেদিনীপুরের এক শিল্পীর তৈরি ৩৫ ফুট উঁচু প্রতিমাটি বেশ দৃষ্টিনন্দন। এ ছাড়া মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিয়ে নিয়ে রয়েছে সচেতনতা-প্রচার।
ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি ও লালগড়েও একাধিক থিমের পুজো হচ্ছে। বেলপাহাড়ি ব্লকের শিলদার ‘রং-তুলি শিল্প শিক্ষানিকেতন’-এর ২৪ বছরের পুজোর থিম ‘নানা রকমের পুতুল’। জঙ্গলমহলের বিভিন্ন শৈলির পুতুল দিয়ে সাজানো হয়েছে মণ্ডপ চত্বর। থার্মোকলে তৈরি সরস্বতী প্রতিমার চেহারাতেও পুতুলের আদল। পুজো উপলক্ষে ২৭ তারিখ পর্যন্ত রয়েছে সংস্থার বার্ষিক চিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
লালগড় ব্লকের বৈতা এলাকার বাজার পাড়ার গোল্ডেন ক্লাবের ৬১ তম বর্ষের থিম শান্তি। বৈতার ওই মণ্ডপটি বানিয়েছেন ঝাড়গ্রামের বিশিষ্ট শিল্পী মানব বাগচি। এখানে প্লাই ও থার্মোকল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বৌদ্ধ স্তূপের আদলে মণ্ডপ।